প্যানেল করে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো গণঅনশন চলছে। নিবন্ধন সনদ পাওয়া প্রার্থীদের নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে নিবন্ধন পরীক্ষা না নেয়া এবং এমপিওভুক্ত (ইনডেক্সধারী) শিক্ষকদের শূন্যপদে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত গণঅনশন চলবে বলে জানিয়েছেন প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি মো. আমির আসহাব।
গতকাল তিনি বলেন, ‘তৃতীয় দিনের গণঅনশনে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমাদের অনেকেই এখন শারীরিকভাবে আগের মতো সক্ষম নন। অনশন এবং পরিবেশে তাদের শরীর কুলিয়ে উঠতে পারেছে না, অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
গত রোববার সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষকরা গণঅনশন শুরু করে, যা গতকাল পর্যন্ত চলে। অনশন চলাকালীন তারা ‘গণবিজ্ঞপ্তির নামে ক্যাসিনো ব্যবসা বন্ধ করো’ ‘এক পোস্টে হাজার আবেদন কোন দেশে নাই’, ‘এক আবেদনে নিয়োগ চাই’ ব্যানার নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করেন। এ সময়, সবার হাতে ‘নিবন্ধন সার্টিফিকেট অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট না, সুতরাং প্যানেল করে নিয়োগ চাই’, ‘সনদ যার চাকরি তার’-ইত্যাদি দাবির ব্যানারও প্রর্দশন করেন। কর্মসূচিতে অংশ নেয়া নারীকর্মীরা পড়েছেন উভয় সংকটে। অনশন করা শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সুপেয় পানি ও সুস্থ পরিবেশ সংকটে অনেকে অসুস্থ বোধ করছেন তারা।
আমির আসহাব বলেন, ‘চাকরির আশায় প্রতি জন ১ হাজারের বেশি আবেদন করেও নিয়োগ পাননি। এক প্রার্থী গড়ে একশ’ আবেদন করেও নিয়োগ পাননি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৮৫ হাজার পদ এখনও খালি। সেখানে আমাদের নিবন্ধিতদের সরকার নিয়োগ দিতে পারে।
যোগ্যতার সনদ পাওয়া আমরা চাকরির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও প্রশাসনের শুভদৃষ্টি কামনা করছি। প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক জি এম ইয়াছিন বলেন, ‘তিন দফা দাবিতে গণঅনশন চলছে। আমাদের দাবি সব নিবন্ধন সনদধারীদের প্যানেল করে নিয়োগ, সনদধারী চাকরি প্রত্যাশীদের নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত নতুন করে নিবন্ধন পরীক্ষা বন্ধ এবং ইনডেক্সধারীদের আলাদা বদলি ব্যবস্থা করতে হবে।’
জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন ছাড়া কোন ব্যক্তি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন না। কিন্তু এনটিআরসিএ ও শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মাঝে সমন্বয়হীনতায় শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি জটিল থেকে জটিল হয়েছে। ১৩তম, ১৪তম, ১৫তমসহ নতুন ১৬তমদের ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হতে যাচ্ছে জটিলতা। সেইসঙ্গে নতুন করে এখন যুক্ত হয়েছে বয়সের বেড়াজাল।
সংগঠনের নেতা ও শিক্ষক কাকলী আক্তার বলেন, ‘আমাদের মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থতার জন্য দরকার একটি ঘোষণা। তা হলো ‘সনদ যার চাকরি তার’।