ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে সানজিদা আক্তার নামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা কাগজেপত্রে দেশে চাকরি করলেও দীর্ঘদিন যাবৎ দেশের বাইরে থাকার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত সানজিদা আক্তার উপজেলার বিদ্যাকুট পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।
জানা যায়, উপজেলার বিদ্যাকুট পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক রয়েছেন ৭ জন। তাদের মধ্যে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ জানুয়ারি এই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিক হিসেবে যোগদান করা সানজিদা আক্তার প্রভাব খাটিয়ে বছরের বেশিরভাগ সময় স্বামীর সঙ্গে ফান্সে থাকেন। চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ৩০ দিনের ছুটি নিয়ে ফ্রান্সে যান। এই ছুটি শেষ হলে ফ্রান্স থেকে পুনরায় দূতাবাসের মাধ্যমে ৭ মে পর্যন্ত ৩ মাসের ছুটি বৃদ্ধি করেন। কিন্তু ৮ মে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে তাকে অনুপস্থিত দেখা যায়।
এ ছাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরা খাতায় ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার ছুটি কৌশলে মঞ্জুর করে নিয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবসরে চলে যাওয়ায় ও সহকারী শিক্ষিকা সানজিদা আক্তার প্রবাসে থাকায় শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে। এতে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার মান নষ্ট হচ্ছে।
বিদ্যাকুট পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেবব্রত ভট্টাচার্য বলেন, শিক্ষক স্বল্পতায় বিদ্যালয়ে পাঠদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যদিও ছুটি সকলের অধিকার কিন্তু প্রধান শিক্ষক অবসরে চলে যাওয়ায় এমনিতেই শিক্ষকের ঘাটতি তার ওপর সহকারী শিক্ষিকা দীর্ঘদিন অনুপস্থিত। ফলে বিদ্যালয় সামলাতে কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
নবীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বুলবুল বলেন, সহকারী শিক্ষিকা সানজিদা আক্তার প্রথমে এক মাসের ছুটি নিয়ে প্রবাসে গিয়ে ৭ মে পর্যন্ত পুনরায় ৩ মাসের ছুটি নিয়েছেন। এরপর তার কোনো বৈধ ছুটি অথবা লিখিত ছুটি নেওয়ার সুযোগ নেই। এমন কি তার কোনো জমা ছুটিও নেই। এখন থেকে সে একদিন অনুপস্থিত থাকলেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তার বেতন ও বিভিন্ন ভাতাদি বন্ধ রাখা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খুরশেদ আলম বলেন, সহকারী শিক্ষিকা সানজিদা আক্তার এক মাসের ছুটি নিয়ে বিদেশ যান। পরে দূতাবাসের মাধ্যমে এই ছুটি তিন মাস বৃদ্ধি করেন। এই ছুটিও শেষ হয়ে গেছে। এখন তিনি যোগদান না করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।