বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের সামনেই রামদা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপ। বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে কয়েক দফায় সংঘর্ষে জড়ায় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ, প্রতিপক্ষের ওপর হামলা ও কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটে।
বিবদমান উপগ্রুপ দুটি হলো-সিএফসি ও সিক্সটি নাইন। সিক্সটি নাইন উপগ্রুপের কর্মীরা সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এবং সিএফসি উপগ্রুপের কর্মীরা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসাবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার ক্যাম্পাসের একটি খাবার হোটেলের টেবিলে বসাকে কেন্দ্র করে সিএফসি ও সিক্সটি নাইনের কর্মীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। দুদিনে উভয়পক্ষের অন্তত ১৭ কর্মী আহত হয়েছে বলে চবি মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে। মেডিকেলের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে অন্তত ৮ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে কুপিয়ে জখম করা দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ছাত্রলীগের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার, সহকারী প্রক্টর আহসানুল কবির পলাশসহ পুলিশের কয়েকজন কর্মী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায় বারবার এ ধরনের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই। সিক্সটি নাইন উপগ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গ হলে প্রক্টর বা পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে এটাই স্বাভাবিক। আমি প্রক্টরকে বারবার বলেছি, কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা কেনো শক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছেন না, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।’
সিএফসি গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদাফ খান বলেন, ‘গতকালের (বুধবার রাত) ঝামেলা মিটমাট হয়েছিল। কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) অতর্কিতভাবে আমাদের কর্মীদের ধাওয়া দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে প্রক্টরের সামনেই তারা আমাদের এক সিনিয়র কর্মীকে কুপিয়ে জখম করে। আমরা আমাদের ছেলেদের বোঝাচ্ছি যেন ঝামেলা না হয়।’ এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতারকে ফোন দেওয়া হলে তিনি প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদারকে একাধিকবার কল দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিজানুর রহমান বৃহস্পতিবার বিকালে বলেন, পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত। দুপক্ষই হলের ভেতরে অবস্থান করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।