দেশে নারী স্বাস্থ্যের বিষয়টি এখনো অবহেলিত। অনেক পরিবারেই নারীকে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার জন্য হাসপাতালে যেতে স্বামী বা শাশুড়ির অনুমতি নিতে হয়। নারী স্বাস্থ্য ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে অসচেতনতা রয়েছে শিক্ষিতদের মধ্যেও। স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে সচেতন করতে পাঠ্যক্রমে প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হলেও অনেক শিক্ষক প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে পড়াতে সংকোচ বোধ করেন।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নারী স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা সংস্থা বিডব্লিউএইচসির (বাংলাদেশ উইমেন্স হেলথ কোয়ালিশন) নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শরিফ মোস্তফা হেলাল বলেন, ‘স্কুল পর্যায়ে পাঠ্যপুস্তকে খুব সুন্দরভাবে প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু অনেক জায়গায়ই আমরা শুনেছি, শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের ওই চ্যাপ্টারগুলো বাসায় পড়ে নিতে বলেন। যেসব জায়গায় শিক্ষক নারী এবং শিক্ষার্থী সবাই কিশোরী, সেসব ক্ষেত্রেও এমনটা করা হয়। অর্থাৎ শিক্ষকেরা এ বিষয়গুলো পড়াতে সংকোচ বোধ করেন। শিক্ষকদের এই সংকোচ কাটাতে হবে।’
বক্তারা জানান, প্রসবজনিত রোগ ফিস্টুলা নারীদের জটিল একটি সমস্যা। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না নেওয়ার কারণে অনেক নারীই এই রোগে আক্রান্ত হন। মাতৃস্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হলে ফিস্টুলার মতো অনেক জটিল অসুখ এড়ানো সম্ভব।
বিডব্লিউএইচসির সভাপতি নাসিমুন আরা হক বলেন, ‘মা হওয়াটা নারীর দুর্বলতা নয়, শক্তি। গর্ভবতী অবস্থায় সঠিক চিকিৎসা পাওয়া নারীর অধিকার। মাতৃমৃত্যু কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। কিন্তু আমাদের আরও কাজ করতে হবে। আমরা চাই, আর একজন নারীকেও যেন সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করতে না হয়।’
বিডব্লিউএইচসি ৪২ বছর ধরে নারী স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দের ১ এপ্রিল সুবিধাবঞ্চিত নারীদের সেবা দেওয়ার মধ্য দিয়ে সংস্থাটির যাত্রা শুরু হয়।