ঝিনাইদহে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো বই পায়নি। অন্য শ্রেণিগুলোতেও রয়েছে বইসংকট। জানা গেছে, বই উৎসবের বেশ কয়েক দিন পেরিয়ে গেলেও বই না পেয়ে অনেক শিশু শিক্ষার্থীর মন খারাপ। এখন তাদের সময় কাটছে স্কুলের মাঠে খেলা করে।
সাকিব হোসেন প্রথম শ্রেণি থেকে এবার দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। উৎসবের দিন নতুন বই আনতে স্কুলে গিয়ে না পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসে সে। কয়েক দিন স্কুলে গিয়ে বই না পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ফেরে। পরে স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্কুলে তাদের বই আসেনি। আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। এসব কথা বলেন সাকিবের দাদা ঝিনাইদহের করাতিপাড়া গ্রামের রেজাউল করিম।
জেলা শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জেলায় প্রাথমিকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৬৫ হাজার ২৯ জন। এ জন্য ৯ লাখ ৮৬ হাজার ২৭৩টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে বই এসেছে ৪ লাখ ৫৯ হাজার ২৩৭টি।
ঝিনাইদহ সদরের করাতিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র শীত উপেক্ষা করে বাইসাইকেলে করে স্কুলে এসেছে দ্বিতীয় শ্রেণির রিফাত, মুরসালিন ও সাকিব। কিন্তু বই না থাকায় ক্লাস না করে স্কুল মাঠে খেলাধুলা করেই সময় কাটছে তাদের। নতুন বই না পাওয়ায় অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থী অভিভাবককে নিয়ে আসছে স্কুলে।
খুদে শিক্ষার্থী রিফাত, মুরসালিন ও সাকিব বলে, স্কুলের বড় ভাইয়েরা বই পেয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো বই পাইনি। এ জন্য স্কুলে এসে ক্লাস করতে পারছি না। তাই আমরা স্কুল মাঠে খেলা করছি।’
অভিভাবক বিপুল কুমার বলেন, গত বছর বই বিতরণে সমস্যা হলেও কিছু নতুন বই পেয়েছিল। কিন্তু এবার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির একটি বইও আসেনি।
বছরের প্রথম মাসের পাঁচ দিন হয়ে গেল তবুও তারা বই পেলো না। নতুন বইয়ের আনন্দটা অন্য রকম। এ রকম হলে শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারিয়ে ফেলবে। দ্রুত এর সমাধান হাওয়া দরকার।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লাউদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম বলেন, ‘নতুন বছরের প্রথম দিনেই আমরা বই বিতরণ করেছি। তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই দিতে পেরেছি। কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই নিতে এলেও তাদের বই দিতে পারিনি। তাদের বই এখনও আমরা হাতে পাইনি। আশা করছি, দ্রুত সব বই পেয়ে যাব’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, এনসিটিবি থেকে নতুন বই না পাওয়ায় এমনটি হয়েছে। কয়েক দিনের ভেতরেই এই সমস্যা কেটে যাবে। একই কথা বলছেন জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম।