নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ আজ শপথ নেবেন। রোববার (১১ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বঙ্গভবনে ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।
এর আগে গতকাল রাতে সৈয়দ রেফাত আহমেদকে এ পদে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। এই নিয়োগ শপথের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, রোববার প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেবেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। দুপুর ১২টায় বঙ্গভবনে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
সৈয়দ রেফাত আহমেদের জন্ম ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ডিসেম্বর। গত মাসে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার প্রধান পদত্যাগের পর ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তারই স্থলাভিষিক্ত হলেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
উল্লেখ্য সৈয়দ রেফাত আহমেদ বাংলাদেশের প্রথিতযশা সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার ইশতিয়াক আহমেদ ও ড. সুফিয়া আহমেদের ছেলে।
ইশতিয়াক-সুফিয়া দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে প্রথম সন্তান সৈয়দ রেফাত আহমেদ। দ্বিতীয় সন্তান ডাক্তার রায়না আহমেদ ইংল্যান্ডে বসবাস করেন বলে প্রধান বিচারপতির পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে। নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতির একমাত্র কন্যা রোশনাক আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন।
নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতির বাবা ইশতিয়াক আহমেদ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের তিনি দ্বিতীয়বার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তার মা ভাষা সৈনিক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. সুফিয়া আহমেদ বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে এএলবি(অনার্স) উত্তীর্ণ হন। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এমএ পাস করার পর যুক্তরাষ্ট্রের টাফ্ট ইউনিভার্সিটির ফ্লেচার স্কুল অব ল এন্ড ডিপ্লোমেসি থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।
২০০৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে স্থায়ী হন সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এর আগে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে জেলা জজ আদালত, ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এবং ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন।
তিনি ‘গ্লোবাল জুডিশিয়াল ইনস্টিটিউট অন এনভাইরনমেন্ট, ব্রাজিল’ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে আইনজীবী এবং বিচারক হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে বক্তৃতা করেছেন তিনি। ব্যক্তিগত ও কর্মসূত্রে অন্তত ২৫টি দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রয়েছে নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতির।