প্রধান শিক্ষক নেই চট্টগ্রাম জেলার ৫১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তারমধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার ২১৫টি ও জেলায় রয়েছে ৩০৪টি। এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে প্রধানশিক্ষক ছাড়াই কার্যক্রম চলছে। শুধু ফটিকছড়ি উপজেলার শতাধিক স্কুলে প্রধানশিক্ষকের পদে আছেন ভারপ্রাপ্ত ও সহকারী শিক্ষকরা। নিয়মিত প্রধানশিক্ষক না থাকায় অনেক দাফতরিক কাজে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন শিক্ষা ও পাঠদানে সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল হক বলেন, প্রধানশিক্ষক না থাকা বিদ্যালয়গুলোর তালিকা ইতোমধ্যে তৈরি করা হচ্ছে। আমরা চট্টগ্রাম থেকে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পাশাপাশি আমাদের যে সব স্কুলে প্রধানশিক্ষক তাতে পদোন্নতি দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।
ফটিকছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাসানুল কবির বলেন, ফটিকছড়ি উপজেলায় প্রায় ১০০ জনের মতো প্রধানশিক্ষকের পদ খালি রয়েছে। এসব পদে ৬৮ জন চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। তারা পদোন্নতি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। বাকিগুলোর দায়িত্ব বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা পালন করছেন। খুব দ্রুত সময়ে এ সমস্যা নিরসন হবে।
কয়েক স্কুল শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানশিক্ষক না থাকার কারণে অতিরিক্ত একজনকে সে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। আবার যে প্রধানশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি সেভাবে ক্লাস নিতে পারেন না। অনেক সময় নানা কাজে শহরে ও জেলা অফিসে যেতে হয়। সে সময়ে অনেক স্কুলে ক্লাস হয় না ভালো মতে। ফলে কোমলতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যহৃত হচ্ছে। তাই শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত সময়ে শূন্য পদগুলো পূরণ করা দরকার।
জানা যায়, চট্টগ্রামে জেলায় মোট ২ হাজার ২৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে উপজেলা ৩০৪টি ও নগরের ২১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধানশিক্ষকের পদ খালি রয়েছে। জেলার মধ্যে ফটিকছড়ি উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বিদ্যালয়ে প্রধানশিক্ষক নেই। এসব পদে নতুন প্রধানশিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। শূন্য এসব পদে প্রধানশিক্ষক পদায়ন হবে পদোন্নতি ও সরাসারি নিয়োগের মাধ্যমে। পদোন্নতির মাধ্যমেই বেশি নিয়োগে হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতির জটিলতা কাটছে ১৪ বছর পর। প্রায় ২৮ হাজার সহকারি শিক্ষক পদোন্নতি পাচ্ছেন প্রধানশিক্ষক হিসেবে। এই পদোন্নতির কার্যক্রম প্রায় শেষ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। এর মধ্যে পদোন্নতি-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। সারাদেশের কিছু কিছু জেলায় পদোন্নতির আদেশ জারি হলেও এখনো পর্যন্ত চট্টগ্রামে একটিও হয়নি। সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ৩০ জুন পর্যন্ত প্রধানশিক্ষকের শূন্য পদ ছিল ২৯ হাজার ৮৬২টি। এর মধ্যে নিয়ম অনুযায়ী ২৭ হাজার ৯০৭ জন সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধানশিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পাবেন। তবে অবসরের কারণে প্রধানশিক্ষকের শূন্য পদ বাড়লে পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকের সংখ্যাও বাড়বে। আর বাকি ১ হাজার ৯৫৫টি পদ সরাসরি নিয়োগের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এই নিয়োগ হবে পিএসসির মাধ্যমে।