দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসানপ্রধান শিক্ষক পদে সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি শুরু

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতির জটিলতা অবশেষে কেটেছে। প্রধান শিক্ষক পদে সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়া শুরু হয়েছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর লক্ষ্মীপুর সদর, কমলনগর ও রায়পুর উপজেলায় ২০১ জন শিক্ষক পদোন্নতি পেয়েছেন। সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশের প্রেক্ষিতে এ শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার ওই ২০১ জন শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দিয়ে আদেশ জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে বেতন পাওয়া সহকারী শিক্ষকরা পদোন্নতি পেয়ে ১১তম গ্রেডে বেতন পাবেন। যদিও শিক্ষক নেতারা বলছেন, পদোন্নতি পাওয়া সহকরী শিক্ষকদের অনেকেই টাইম স্কেল পেয়ে ১০ম বা ১১তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। তাদের বেতন ১১ম গ্রেডে ফিক্সেশন করা হলে নতুন জাতীয় পে-স্কেল ঘোষণা হলে শিক্ষকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই পদোন্নতি পাওয়া সহকারী শিক্ষকরা যে যেই গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন তাদের বেতন ওই গ্রেডে ফিক্সেশন করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

শিক্ষকরা বলছেন, এর আগে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষকদের সর্বশেষ পদোন্নতি দেয়া হয়েছিলো। এ পদোন্নতি দেয়ার মাধ্যমে ১৪ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো। জানা গেছে, পদোন্নতি পাওয়াদের মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ১২৬ জন, কমলনগর উপজেলার ২৮ জন ও রায়পুরা উপজেলার ৪৭ জন শিক্ষক রয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মাহবুবুর রহমান তুহিন দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে লক্ষ্মীপুর জেলার লক্ষ্মীপুর সদর, কমলনগর ও রায়পুর উপজেলার ২০১ জন সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির অফিস আদেশ জারি করেছে। 

তিনি আরো জানান, পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের আগামী ৮ আগস্ট লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে যোগদান করতে হবে। ওই দিন কেউ যোগদানে ব্যর্থ হলে তিনি পদোন্নতি যোগ্য নন বলে গণ্য হবেন এবং তার পদোন্নতির আদেশ বাতিল হবে। যোগদান পরবর্তী দুই কার্য দিবসের মধ্যে নতুন প্রধান শিক্ষকদের পদায়ন করা হবে। এ ক্ষেত্রে চলতি দায়িত্ব বা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে নিয়োজিত পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকদেরকে কর্মরত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদেই পদায়ন করতে হবে।

গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের নির্দেশনায় মন্ত্রণালেয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের উদ্যোগে পদোন্নতির জটিলতার নিরসন হয়েছে। মামলা ছাড়াও সারা দেশের সহকারী শিক্ষকদের গ্রেডেশন তালিকা চূড়ান্ত করা নিয়ে বড় ধরনের জটিলতা ছিলো। কারণ, বিষয়টি ছিলো জটিল ও সময়সাপেক্ষ। এ সমস্যা উত্তরণে ‘সমন্বিত গ্রেডেশন ব্যবস্থাপনা’ নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। এরপরই ডিজিটাল পদ্ধতিতে চূড়ান্ত হয় গ্রেডেশন লিস্ট। 

পদোন্নতি পাওয়া সহকারী শিক্ষকরা যে যেই গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন তাদের বেতন ওই গ্রেডে তাদের বেতন ফিক্সেশন করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল আমিন। তিনি দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর পর পদোন্নতির দ্বার খুলে দেয়ার জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। তবে পদোন্নতির পর কিছু বিষয়ে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। পদোন্নতি পাওয়ার আগেই অনেক সহকারী শিক্ষক টাইমস্কেল পেয়ে ১১তম বা ১০ম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। পদোন্নতি পেয়ে ১১তম গ্রেড পাবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, ফিক্সেশনের বিষয়টা অবশ্যই স্পষ্ট হতে হবে। যদি স্ববেতনেও পদোন্নতি দেন, তাহলে শিক্ষকদের কোনো লাভও নেই লসও নেই। যদি ফিক্সেশন করার সময় ধাপে না মেলে এবং পার্সোনাল পেমেন্ট দেয়া হয় সেক্ষেত্রে অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। যদি উচ্চধাপে বেতন নির্ধারণ হয় সেখানেও ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে। কারণ, সরকার যখন নতুন জাতীয় পে-স্কেল ঘোষণা করবে তখনতো পদোন্নতি পাওয়া সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম স্কেল থেকে জাম্প করবে। আর যদি পদোন্নতি না নেন, সেক্ষেত্রে যারা ১০ম গ্রেডে আছেন, তাদের বেতন ১০ম গ্রেড থেকেই জাম্প করবে। 

 তিনি আরো বলেন, এক্ষেত্রে সহকারী শিক্ষক পদোন্নতির আগে যতোগুলো টাইম স্কেল পেয়েছেন ১১তম গ্রেডের সঙ্গে ততোগুলো স্কেল যোগ করে ফিক্সেশন করতে হবে। ফিক্সেশন করার সময় ১০ম গ্রেডে অবস্থানরত শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডেই থাকবেন এবং প্রমোশনের কারণে ১-২টা ইনক্রিমেন্ট যোগ করা যেতে পারে। তা হলে পদোন্নতিতে কোনো শিক্ষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের পাঠকদের জন্য পদোন্নতি পাওয়া ২০১ জন শিক্ষকের পদোন্নতির আদেশ তুলে ধরা হলো। 

আদেশ দেখতে ক্লিক করুন

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল    SUBSCRIBE   করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য - dainik shiksha ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত - dainik shiksha উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028328895568848