প্রধান শিক্ষকের আত্মহত্যা : সভাপতির শাস্তি চান স্ত্রী

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি |

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাসারের আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনা জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী নুরুন্নাহার পারভীন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার আসামি ও এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুর রহিমসহ অন্যান্য আসামিদের শাস্তির দাবি জানান। এসময় তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক আবুল বাসারকে মানসিক ও শারিরীকভাবে চাপ প্রয়োগ করে আত্মহননের প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ তোলেন।

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শ্যামনগরের কৈখালী গ্রামের মো: নুরুল ইসলাম সরদারের মেয়ে ও নিহত প্রধান শিক্ষা আবুল বাসারের স্ত্রী নুরুন্নাহার পারভীন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার স্বামী মো. আবুল বাসার কৈখালী এস আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে সুনামের সঙ্গে চাকরি করে আসছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি কৈখালী এস আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নতুন কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন ধর্ষণ, মানব পাচার ও পুলিশের ওপর হামলাসহ একাধিক মামলার আসামি আব্দুর রহিম। 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রহিমসহ তার অপকর্মের সহযোগীরা দীর্ঘ ১০ মাস ধরে আমার স্বামীকে মানসিক ও শারীরিকভাবে স্কুলে ও স্কুলের বাইরে নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। এছাড়া আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মারুফা নামে এক মহিলাকে দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা বানোয়াট মামলা সৃষ্টি করে আমার স্বামীকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে। এমনকি ওই মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতির কথা বলে আব্দুর রহিম, আলী মোতুর্জা, আব্দুল মজিদ, সালাউদ্দীন, আব্দুল মান্নান, মারুফা এবং জাকির গাজী প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে এবং মুঠোফোনের মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী নিরুপায় হয়ে আব্দুর রহিমের হাতে ৫ লাখ টাকা নগদ দেন। টাকা পেয়ে আরও ৪৫ লাখ টাকা দাবি করেন। আমার স্বামী ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্কুলের অফিস রুমের মধ্যে উল্লেখিত ব্যক্তিরা আমার স্বামীকে মারধর করতে উদ্যাত হয় এবং খুন জখমসহ বিভিন্ন হুমকি দেয়। তাদের কারণে আমার স্বামী মানসিকভাবে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। তিনি অসুস্থ হওয়ার পর সভাপতি আব্দুর রহিমের কাছে ছুটির দরখাস্ত করলে তিনি তা মঞ্জুর না করে তাকে কেন চাকরিচ্যুত করা হবে না তা জানতে চেয়ে শোকজ করেন। শোকজ নোটিশ পাওয়ার  পর পর আমার স্বামী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে গত ৪ জানুয়ারি নিজ বাড়ীতে কেউ না থাকার সুযোগে গোপনে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

তিনি আরও বলেন, একজন প্রধান শিক্ষককে পরিকল্পিতভাবে মানহানি করে আত্মহত্যায় বাধ্য করেছে উল্লেখিত ব্যক্তিরা। এঘটনায় আমি বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছি। ওই মামলায় ৬ জন আটক হয়ে কারাগারে রয়েছেন। এদিকে আসামিদের স্বজনরা প্রকাশ্যে এবং বিভিন্ন মাধ্যমে মামলা তুলে নিতে খুন জখমসহ আমাকে এবং আমার সন্তানদের হত্যার হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। এছাড়া আসামিরা জামিনে বের হয়ে আসার পর আমাদের ‘মজা দেখাবে’ বলে হুমকি দিচ্ছে। আমরা উল্লেখিত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে আমাদের নিরাপত্তার নিশ্চিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বড় ছেলে জি এম মেহেদী হাসান, ছোট ছেলে জি এম সামিউল আডম, শ্বশুর মো. নুরুল ইসলাম ও নাজনীন জাহান।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031931400299072