কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের মধ্য রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল আলম বাদলের বিরুদ্ধে নিয়মিত বিদ্যালয়ে না আসা, বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দ অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তার অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী। গতকাল দুপুরে বিদ্যালয় মাঠে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। দুই শতাধিক নারী-পুরুষ কর্মসূচিতে অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শফিকুল আলম বাদলের বাড়ি বিদ্যালয়ের পাশে হওয়ায় ২৭ বছর ধরে প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিদ্যালয়টিতে রয়েছেন।
আগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন তার বড়ভাই আজম পাশা ধনু। বড়ভাই মারা যাওয়ার পর ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে শফিকুল ইসলাম বাদল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন। বাড়ির পাশের বিদ্যালয় হওয়ায় তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। মাঝে মধ্যে এলেও হাজিরা খাতায় সই দিয়ে চলে যান। এ অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয় উন্নয়ন পরিকল্পনার (স্লিপ) টাকা আত্মসাৎ, অবৈধভাবে ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন মানববন্ধনকারীরা।
মানববন্ধনের আগে এ নিয়ে সর্বশেষ গত ৯ই এপ্রিল শফিকুল আলমের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা।
অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ে শিক্ষা উপকরণ ক্রয়, খেলাধুলার সরঞ্জাম সরবরাহসহ নানা উন্নয়ন কাজের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দকৃত লাখ লাখ টাকা কাজ না করে তিনি আত্মসাৎ করেন। অভিযোগের পরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় মানববন্ধন করেছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের জমিদাতা রামনগর গ্রামের মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, মোহাম্মদ সেকান্দর আলী, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ শারফ উদ্দিন এবং অভিভাবকদের মধ্যে মোহাম্মদ বরজুল মিয়া, আওলাদ মিয়া, সাদ্দাম হোসেন, মো. হুমায়ুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মধ্য রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল আলম বাদল।
তিনি বলেন, বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে এবং পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হয়ে আমি সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। করিমগঞ্জ উপজেলা
প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবু তাহের ভূঞা বলেন, মধ্য রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটা লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। মানববন্ধনের খবরও পেয়েছি। তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।