সুনামগঞ্জের তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক ইয়াহিয়া তালুকদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির অভিভাবক এক সদস্য মো. সামায়ূন কবির এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৭ই সেপ্টেম্বর অত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন গভর্নিং বডির কমিটি গঠিত হয়। কমিটি গঠনের পর কয়েকটি মিটিংও সম্পূর্ণ হয়। মিটিংয়ের একপর্যায়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যয়, শিক্ষার্থী সংখ্যা, উপ-বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী, গরিব মেধাবী শিক্ষার্থী সংখ্যা এবং বিদ্যালয়ের ফলাফল ও বার্ষিক ক্রীড়া
প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক এ বিষয়গুলো এড়িয়ে গিয়ে বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সদস্যের সঙ্গে চরম খারাপ আচরণ করেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ইয়াহিয়া তালুকদার। যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি বছর জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রত্যয়নপত্র বাবদ বিনা রশিদে ১শ’ করে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন তিনি। প্রত্যেক বছর জানুয়ারিতে ৬ষ্ঠ ও একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির ফরম বাবদ বিনা রশিদে ১১০ টাকা করে নিয়ে নিজের পকেট ভারী করছেন। সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে অত্র বিদ্যালয়ের তালিকাভুক্ত উপবৃত্তিধারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও বেতন নিচ্ছেন তিনি। শিক্ষার্থীদের পূর্ণ ভর্তি বাবদ সেশন ফি ১ হাজার করে টাকা নেয়ার পরও বার্ষিক মিলাদ মাহফিল এবং পূজা উপলক্ষে বিনা রশিদে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অদৃশ্য শক্তির বলে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি।শ্রেণিকক্ষ স্বল্পতার মধ্যেও বিদ্যালয়ের একটি রুমে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন তিনি। অথচ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি থেকে প্রতি মাসে বাড়ি ভাড়া বাবদ ১০ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন তিনি।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তোজাম্মিল হক নাসরুম জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কারও তোয়াক্কা করেন না। তিনি গায়ের জুরে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করছেন।
বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য সামায়ূন কবির বলেন, অত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ইয়াহিয়া তালুকদার যোগদানের পর থেকেই অনিয়ম দুর্নীতি করে আসছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখা সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। একজন ছাত্র অভিভাবক হিসেবে অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়টি চোখে পড়ায় আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক ইয়াহিয়া তালুকদার অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, বিধি সম্মতভাবেই আমি বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছি। কোনো অনিয়ম দুর্নীতি করছি না।
বিদ্যালয়ের রুম দখলের বিষয়ে তিনি বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তক্রমেই পরিবার নিয়ে একটি রুমে বসবাস করছি আমরা। এ ছাড়া যেহেতু এখানে একটি মেয়ে হোস্টেল আছে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও আমাকে এখান থেকে দেখতে হয়।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।