পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মহিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তৃপ্তি রানী ভৌমিক ও সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিনের অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিভাবকরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিনের নিকট প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষার্থীদের স্কুল পরীক্ষার খাতায় কম নম্বর দেয়া হয়।
পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে তাদের প্রাইভেট শিক্ষার্থীদের ভিন্ন হলরুমে পরীক্ষা নেয়া হয়, বর্তমানে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র হওয়া সত্ত্বেও তার প্রাইভেট শিক্ষার্থীদের ফলাফল ৯০% এবং অন্য শিক্ষার্থীদের ৬০শতাংশ নম্বর দিয়ে উত্তীর্ণ করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অর্জিত ফলাফল পরিবর্তন করে ইচ্ছামতো ফলাফল প্রকাশ করছে। অভিভাকদের মূল্যায়ন না করা, শিক্ষকদের প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টি ও মানসিক নির্যাতন করা। প্রতিষ্ঠানে সরাকারি বরাদ্দ ও প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সম্পদ থেকে অর্জিত অর্থ কোনো কাজ না করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩ একর জমি এবং মৎস্য চাষের জন্য একাধিক ঘের রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ১৩ একর জমির থাকলেও মাত্র ৩ একর জমি বর্তমানে ভোগ-দখল করছে। বাকি জমি অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন জনকে ভোগ-দখলের অনুমতি দিয়েছে। এভাবে প্রতিবছর এই প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি থেকে অর্জিত অর্থ, বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দের লাখ লাখ টাকা কাজ না করেই খরচ হয়ে যায়। বিদ্যালয়ে সরজমিন দেখা যায়, একটু বৃষ্টিতেই মাঠে জলাশয় সৃষ্টি হয়। রাস্তা থেকে বিদ্যালযের ২০০ মিটার প্রবেশ পথটি সবসময়ই পানিতে তলিয়ে থাকে।
ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে আসতে অনেক বেগ পোহাতে হয়। এসব বিষয়ে আগে একাধিক বার অভিযোগ হয়েছে।
প্রধান শিক্ষিকা তৃপ্তি রানী ভৌমিক এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, এগুলো সব মিথ্যা ও বানোয়াট।
মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি শাহ আলম হাওলাদার জানান, তিনি সভাপতি থাকাকালীন লতাচাপলী মৌজায় ৯.৯৮ একর এবং স্কুল সংলগ্ন ৬৬ শতাংশ জমি রেখে গিয়েছিলেন, বর্তমানে তিন ভাগের দুই ভাগই নেই, আছে মাত্র তিন একর, বাকি জমি অর্থের বিনিময়ে বেদখল হয়ে গেছে, স্কুলের ৬৬ শতাংশ জায়গায় স্কুলের ভবন নেই, সে জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে মাছের আড়ত, স্কুলের ভবন এখন অন্যের জায়গায় জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। তাই তিনি স্কুলের সকল জমি উদ্ধারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের এসব অনিয়মের বিচার দাবি করেন।
কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম রকিবুল আহসান জানান, বেশ কয়েকজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা ও অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন এবং কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কলাপাড়াা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, অভিযোগ আমলে নিয়ে কলাপাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।