প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৫৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, সুনামগঞ্জ: |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিদায়ী প্রধান শিক্ষক মো. মনসুর রহমান খানের বিরুদ্ধে প্রায় ৫৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা রিপোর্টে উঠে এসেছে এই তথ্য। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক, বিভাগীয় উপপরিচালক ও জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। মো. মনসুর রহমান সম্প্রতি অবসরোত্তর ছুটিতে গেছেন।

নিরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক নিখিল চন্দ্র দেবনাথ। সদস্য ছিলেন সিনিয়র শিক্ষক লিটন রঞ্জন তালুকদার, সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, সহকারী শিক্ষক মো. ফয়জুর রহমান ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মো. কামরুল ইসলাম। কমিটির রিপোর্টে বলা হয়, ২০২২ সালের ১৬ জুন থেকে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন মো. মনসুর রহমান খান। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট খাত ব্যতীত এক খাতের অর্থ অন্য খাতে স্থানান্তরের নির্দেশনা না থাকলেও মো. মনসুর রহমান খান এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। তাঁর সময়ে বিভিন্ন দোকান, খাবারের হোটেল, মেডিকেল সামগ্রী ক্রয়, রড ও সিমেন্টের দোকান, ইটভাটা ইত্যাদির ২৬২টি ভাউচারে একই ধরনের লেখা পাওয়া যায়, যার সঙ্গে মনসুর রহমান খানের হাতের লেখার মিল রয়েছে। এসব ভাউচারের ১১৭টি শহরের একটি খাবার হোটেল থেকে নেওয়া। তাছাড়া, বিদ্যালয় মসজিদের ২ লাখ ৪৬ হাজার ৭০ টাকা খরচ দেখানো হলেও তিনটি সিলিং ফ্যান ছাড়া কোনো কিছুই দৃশ্যমান নয়, খরচের ভাউচারও পাওয়া যায়নি।

রিপোর্টে আরও বলা হয়, ২০২৩-এর ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মচারী সম্মানী বাবদ ১ লাখ ৭৯ হাজার টাকা উত্তোলন হলেও তা বণ্টন করা হয়নি। এক পর্যায়ে ৪৩ হাজার  

৬০০ টাকা বণ্টনের কাগজে শিক্ষক-কর্মচারীরা স্বাক্ষর করেন। বাকি টাকার কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, দুই অর্থবছরে ৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা সরকারি কোষাগার থেকে পাওয়ার কথা রেজিস্টার খাতায় উল্লেখ থাকলেও খরচের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা উত্তোলন হলেও মাত্র ৪২ দিন টিফিন করানো হয়েছে। প্রতিদিন জনপ্রতি টিফিন ছিল ১০ থেকে ১২ টাকার। এই হিসাবে ৭ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। বাকি টাকার হদিস নেই।

অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক নিখিল দেবনাথ বলেন, ‘নিরীক্ষায় ৫৬ লাখ ১২ হাজার ৯৮৩ টাকার অসংগতি পাওয়া গেছে। ৩৩টি তহবিল থেকে এই টাকা তোলা হয়েছে। নামে-বেনামে ভাউচার জমা হয়েছে।’ বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ফয়জুর রহমান বলেন, ‘বিদায়ী প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের বিশাল অঙ্কের তহবিলশূন্য করে চলে গেছেন। মোটা অঙ্কের টাকার গরমিল।’

বিদায়ী প্রধান শিক্ষক মনসুর রহমান খান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এভাবে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ফয়জুর রহমান করাতে পারেন না। তিনি হিংসা থেকে এসব বলছেন।’ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে এবং জবাব চাইলে তা দেবেন বলে জানান বিদায়ী প্রধান শিক্ষক।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044350624084473