প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “বাংলাদেশ হচ্ছে বিনিয়োগের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে সেরা জায়গা। কারণ, আমরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। এখানে অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের জন্য ইউটিলিটিজ সার্ভিসসহ সকল ব্যবস্থা আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চলে করে দিচ্ছি।”
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। জাপানের পাশাপাশি আরও কিছু দেশ, ভারত, চীন, সৌদি আরবসহ আরও অনেকগুলো দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যারা আসবে, আমরা তাদের যেভাবে চায় সেভাবেই অর্থনৈতিক অঞ্চলে সুযোগ দেবো। তারা যেভাবে উন্নয়ন করতে চায়, করতে পারবে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বিনিয়োগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা। চমৎকার পরিবেশ আছে এখানে। কারণ, আমরা সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব আইন করে দিয়েছি। বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সেবা ও পরিষেবা অনুমোদনের ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা হয়েছে। কিছু জটিলতা থাকলেও আমরা সেটা নিরসন করছি। সবচেয়ে বড় বিষয় বাংলাদেশের অবস্থান; বাংলাদেশ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন। এখান থেকে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে সমুদ্রপথ, আকাশ ও রেলপথ ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের সুযোগ আছে।”
সরকারপ্রধান বলেন, “নিজস্ব মার্কেটের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বড় বাজার রয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগ উন্নত করে দিয়েছি, তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে, সেখানেও আমাদের বাজার আছে। কাজেই বিনিয়োগের সব থেকে উত্তম জায়গা বাংলাদেশ। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ ৩০০ কোটির বেশি মানুষের বাজার হতে পারে। প্রায় ১৭ কোটি মানুষ আমাদের নিজেদেরই। আর পূর্ব দিকে ৫০ কোটি, উত্তর দিকে ১৫০ কোটি, পশ্চিমে ১০০ কোটি মানুষের বাজার বিদ্যমান। যোগাযোগ অবকাঠামো বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ থেকে পণ্য পরিবহনের বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে যারা বিনিয়োগ করবেন, নিজেরা সমৃদ্ধ হবেন, আমাদের দেশেরও উন্নতি হবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি আশা করি, আজকের এই জাপানের উদ্যোগটা অন্যদেরও আগ্রহী করবে। জাপানকে ধন্যবাদ জানাই, তারা আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প করে দিচ্ছে। আমাদের ৫০ বছরের বন্ধুত্বের নিদর্শন। তাদের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্বে অনেক প্রকল্প আছে। ব্যবসাবান্ধব আরও অনেক প্রকল্প হবে আশা করি।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। কৃষি জমি যাতে নষ্ট না হয়, যত্রতত্র যেন শিল্প কলকারখানা না হয়, সেজন্য যেখানে ফসল হয় না, সে জমিতে আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিই। পরিবেশবান্ধব যাতে হয়, সে বিষয়টি বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলবে। নারী উদ্যোক্তাদেরও বিশেষভাবে আলাদা প্লট দেওয়া হবে।”
এ সময় আড়াইহাজার প্রান্ত থেকে বক্তব্য রাখেন জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, জাপানের সুমিতমো কর্পোরেশনের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মাসাইউকি হিওদো, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন। উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু ও জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ প্রমুখ।