দ্বৈত চাকরি ও তথ্য গোপন করে সরকারিকরণে নাম অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রাউজান সরকারি কলেজের প্রভাষক সুজন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক সুজন বিশ্বাস রাঙ্গামাটি জেলার আসাম বস্তি এলাকার বিশ্বরঞ্জন বিশ্বাসের ছেলে।
জানা যায়, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পদ সৃজন-সংক্রান্ত মূল কাগজপত্র যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে সুজন বিশ্বাসের নিয়োগ নম্বরপত্রে ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়েছিল। সে সময় বিষয়টি মন্তব্য আকারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের শুরুতে নিয়োগ ও যোগদান-সংশ্লিষ্ট এক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অধীনে অধ্যক্ষ স্থানীয় তদন্ত, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ ডিসেম্বর মাউশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক ও সহকারী পরিচালকের (কলেজ) দ্বারা অবৈধ নিয়োগের তদন্ত এবং তিন বছর পর কলেজে যোগদান সম্পর্কিত আরো দুটি অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন হয়। সবশেষ ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে নিয়োগ ও যোগদানে অনিয়ম, কোচিং বাণিজ্য, মার্কশিট জালিয়াতি, মিথ্যা প্রত্যয়ন এবং দ্বৈত চাকরি করার অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। তদন্তে নিয়োগ নম্বরপত্রে ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ নম্বরপত্র সৃজন, তিন বছর পর কলেজে যোগদান এবং একসঙ্গে দুই কলেজে চাকরি করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ২ জুন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশের মাধ্যমে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ফৌজদারি মামলার নির্দেশনা দেয়া হয়।
সূত্রমতে, কলেজের সদ্য বিদায়ি অধ্যক্ষ মো. নুরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের দুজন কর্মকর্তা সরজমিন এসব অভিযোগ তদন্ত করেন। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সুজন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানা গেছে। তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানান, হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক সুজন বিশ্বাসের নিয়োগ-যোগদান ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে দেখানো হলেও মূলত তিনি তিনি যোগদান করেছিলেন ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে।
মামলার অগ্রগতির বিষয়ে জানার জন্য রাউজান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিম নাওয়াজ চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।