বার্ষিক প্রশিক্ষণের সময় রশি ছিঁড়ে নিচে পড়ে বরিশাল ক্যাডেট কলেজের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বরিশালের শেখ হাসিনা সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ওই শিক্ষার্থীর নাম সালমান রহমান ওরফে জুবায়ের। সে পটুয়াখালীর গলাচিপা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. শাহজালালের ছেলে। আজ বুধবার জানাজা শেষে সালমানকে গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের তার গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
সালমানের মৃত্যুর বিষয়ে জানার জন্য বরিশাল ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাইহান আহম্মেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) বিজয় বলেন, ক্যাডেট কলেজের এক শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত অবস্থায় গতকাল বিকেল ৫টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। পরে অভিভাবকেরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লেবুখালী শেখ হাসিনা সেনানিবাসের সিএমএইচে নিয়ে যান।
কলেজ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানান, গতকাল বিকেলে বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে ক্যাডেট কলেজ অভ্যন্তরে বার্ষিক একটি প্রশিক্ষণের সময় সালমান রশি ছিঁড়ে পড়ে যায় এবং নিচে লোহার বিমে গুরুতর আঘাত পায়। এরপর আহত অবস্থায় তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। পরে সালমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা সেনানিবাসের সিএমএইচে নেওয়ার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সালমানের বাবার সহকর্মী গলাচিপা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ফোরকান কবির আজ দুপুরে বলেন, সালমানের মরদেহের সঙ্গে ক্যাডেট কলেজের হাউস টিউটর এসেছিলেন। এ ছাড়া সিএমএইচে ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, গতকাল বিকেলে তাদের একটি প্রশিক্ষণ চলার সময় সালমান রশি ছিঁড়ে নিচে পড়ে স্টিলের একটি বিমের ওপর পড়ে গিয়ে গুরুতর আঘাত পায়। তার এই অকাল মৃত্যুতে পরিবার, স্বজনেরা সবাই শোকে মুষড়ে পড়েছেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মো. শাহজালালের দুই সন্তানের মধ্যে সালমান বড়। ছোট ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। ছোটবেলা থেকে সালমান খুব শান্ত প্রকৃতির ছিল। আজ সকাল ১০টায় সালমানের প্রথম জানাজা হয় গলাচিপা সরকারি কলেজ মাঠে। এতে কলেজের শিক্ষকেরাসহ হাজারো মানুষ যোগ দেন। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় দ্বিতীয় জানাজা হয় গলাচিপার পানপট্টি ইউনিয়নের গ্রামের বাড়িতে। সেখানে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।