প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রীশিবপুর মুহাম্মদীয় দাখিল বালিকা মাদরাসার নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও উপজেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকেরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আকমল হোসেন। তিনি জানান, একাধিক মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বিশেষ কারণে চিঠি দিয়ে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
যদিও প্রশ্নপত্র ফাঁস বা নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাদরাসা সুপার মো. শহিদুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল।
জানা গেছে, মুহাম্মদিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসায় সহকারী সুপার, নিরাপত্তা কর্মী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে নিয়োগ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। ওই পদের জন্য আবেদন করা প্রার্থীদের নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করেন তারা। গতকাল শনিবার দুপুরে পরীক্ষা গ্রহণের কথা ছিলো। যারা আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে সহকারী সুপার পদে প্রার্থী রয়েছেন ৭ জন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদরাসার দুই শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির এক সদস্য দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মহসিন উল ইসলাম হাবুল শুরু থেকেই তার পছন্দের প্রার্থীদের তিনটি পদে নিয়োগের চূড়ান্ত করার পাঁয়তারা করে আসছিলেন। এমনকি নিয়োগ পরীক্ষার তিনদিন আগেই পছন্দের প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছেন। বিনিময়ে তিনি ওই প্রার্থীদের কাছে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মাদরাসা সুপার মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম দাবি করেন, একটি মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছে। তাছাড়া নিয়োগ কার্যক্রম পুরোটাই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পরিচালনা করেন বলে জানান তিনি।
ব্যক্তি শত্রুতা মেটাতে মাদরাসায় নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তোলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল। তিনি বলেন, নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সদস্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার পরীক্ষার দিন উপস্থিত থাকতে পারবে না জানিয়ে সুপারের কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন। তার অনুপস্থিতির কারণে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তার উপস্থিতিতে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার কাছে টাকা নিয়ে কেউ আসেনি এটা বলবো না। এসেছিলো, কিন্তু আমি টাকা রাখিনি। কারণ প্রার্থী অনেক, তাদের মধ্যে থেকে চাইলেই তো একজনকে নিয়োগ দেয়া সম্ভব না। এখানে নিয়োগ বোর্ড আছে। তা নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে একটি মহল ভুয়া অপপ্রচার করছে বলে দাবি তার।