কুড়িগ্রামে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সাতজন জড়িত থাকার তথ্য তদন্তে উঠে এসেছে। তাদের মধ্যে ছয়জনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক আছেন একজন। গ্রেপ্তারদের মধ্যে প্রধান আসামি জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মো. লুৎফর রহমানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শেষ করেছে। আগামী রবি বা সোমবার প্রতিবেদন দাখিল করবে কমিটি। তিনি জানান, পলাতক এক আসামি ভারতে পালিয়েছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর বোর্ডের অধীন নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠে। এরপর ওই কেন্দ্রের সচিব ও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা স্বীকার করেন। একই সঙ্গে তার কাছে কয়েক দিনের আগাম প্রশ্নপত্র রয়েছে বলে জানান। পরে তার কক্ষ তল্লাশি করে গণিত (আবশ্যিক), উচ্চতর গণিত, কৃষিশিক্ষা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়। পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান ও রসায়ন পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর স্থগিত হওয়া চারটি পরীক্ষার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে জীববিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) ও উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়)-এর প্রশ্নপত্র বাতিল করা হয়।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ২০ সেপ্টেম্বর রাতে ট্যাগ অফিসার ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আদম মালিক চৌধুরী বাদী হয়ে কেন্দ্র সচিবসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে অন্য পাঁচজন হলেন নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান, ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক জোবাইর রহমান, কৃষিবিজ্ঞানের শিক্ষক হামিদুল ইসলাম, বাংলা শিক্ষক সোহেল রানা চৌধুরী ও অফিস সহকারী সুজন মিয়া। ঘটনার পর থেকে পলাতক ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আবু হানিফ।
কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমানের তিন দিনের রিমান্ড চেয়ে গতকাল কুড়িগ্রাম মুখ্য বিচার বিভাগীয় হাকিম আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আজহার আলী। শুনানি শেষে বিচারক মো. সুমন আলী আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এ ছাড়াও অন্য পাঁচ আসামির মধ্যে দুজনের রিমান্ড আবেদন জানালে আদালত আগামী রবিবার শুনানির দিন ধার্য করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আজহার আলী সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।