প্রশ্নফাঁসে জেল খাটলেও বরখাস্ত না হয়ে উল্টো পদোন্নতি

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

মেডিক্যালের প্রশ্ন ফাঁস মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। দুই মামলায় জেলও খেটেছেন ৪০ দিন। তারপরও বরখাস্ত হওয়া দূরের কথা, উল্টো পেয়েছেন পদোন্নতি। তিনি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডা. সোলায়মান হোসেন মেহেদী। অথচ এসবের কিছুই জানে না বলে দাবি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।

৯ অক্টোবর সকাল ১১টা। হাসপাতালে পাওয়া গেল না জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সোলায়মান হোসেন মেহেদীকে। তার বায়োমেট্রিক হাজিরায় লেখা প্রশিক্ষণে আছেন। 

একই দিনে তাকে পাওয়া যায় রাজধানীর বিচারিক আদালত এলাকায়। ক্যামেরা দেখেই পালিয়ে যান ডা. মেহেদী। মেডিক্যালের প্রশ্ন ফাঁস মামলার শুনানিতে হাজিরা দিয়েছেন তিনি।  

জয়পুরহাট তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘আমার কাছ থেকে তিনি কোনো ছুটি নেননি।’

কয়েক দিন পর পাঁচবিবি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাওয়া যায় ডা. মেহেদীকে। দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। গ্রেফতারও  হননি কখনো। তার মিথ্যা ধরিয়ে দিলেন প্রশ্নফাঁসে একই মামলার আরেক আসামি।  
 
প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলার আসামি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ডা. মেহেদীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল।’ 
   
২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ৩৩ তম বিসিএসে নিয়োগ পান ডা. সোলায়মান হোসেন মেহেদী। কর্মস্থল দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ হলেও মেডিক্যালের প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৮ অক্টোবর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার হন। কারাগারে ছিলেন ২২ দিন। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে সেই মামলার চার্জশিট দেয়া হয়েছে। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে রাজধানীর কলাবাগান থানা ও খুলনায় তার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা হয়।

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘জড়িত যদি না থাকতো তাহলে তার বিরুদ্ধে তো এজহার হতো না। পরবর্তীতে চার্জশিট হয়। প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ হয়েছে যে ডাক্তার মেহেদি এই মামলার সঙ্গে জড়িত আছে।’

অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে গ্রেফতার ও কারাগারে থাকার বিষয়টি গোপন করে সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজান ডা. মেহেদী। ভুয়া মেডিক্যাল সার্টিফিকেট তৈরি করে নেন ছুটি। 


 
এত কিছু হয়ে গেলেও জানে না স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (শৃঙ্খলা) ডা. এ বি শামছুজ্জামান বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা এ সংক্রান্ত তথ্যাদি চেয়ে এরপর তথ্যাদির ভিত্তিতে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলব।’

চাকরি বিধি অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মকর্তা ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার, কারাবন্দি বা চার্জশিটভুক্ত হলে নির্দোষ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত বরখাস্ত থাকবেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048248767852783