দুর্নীতির দূর্গখ্যাত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে জড়িত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তারা সবাই ঢাকা টিটি কলেজে বসে প্রশ্ন তৈরি ও বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে বিতরণসহ সব কাজে যুক্ত ছিলেন। এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মাউশির শারীরিক শিক্ষা ও বিশেষ শাখার কয়েকজন এবং ইডেন কলেজের কয়েকজন কর্মচারী ও দালাল। ফাঁসের ঘটনায় ৩৬ তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা রিমান্ডে নানা তথ্য দিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
আর নওশাদ ও আহসান হাবিব নাম মাউশি অধিদপ্তরের দুইজন কর্মচারীকে খুঁজছে পুলিশ। গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় ফাঁসের ঘটনায় সুমন জোয়াদ্দার নামে এক পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের একটি কক্ষ থেকে তাকে উত্তরপত্রসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় তার কাছ থেকে দুটি প্রবেশপত্র, একটি উত্তরপত্র, একটি প্রশ্নপত্র ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।পরীক্ষাটি বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দুএকদিনের মধ্যে ঘোষণা আসতে পারে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে মাউশি অধিদপ্তরের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক গ্রেড-১৬’ পদের পরীক্ষা দেওয়ার সময় ওই পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি প্রবেশপত্রের পেছনে ছোট ছোট করে সব প্রশ্নের উত্তর লিখে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরীক্ষা দেওয়ার সময় ওই কক্ষে ডিউটিরত শিক্ষক দেখতে পান, প্রবেশপত্রের পেছনে লেখা উত্তর দেখে উত্তরপত্র পূরণ করা হচ্ছে। তখন ওই শিক্ষক ওই পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র যাচাই করলে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
এরপর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। একটি সূত্রমতে, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বন্টনে পাঁচটি কমিটি গঠন করা হয়েছিলো তাদের মধ্যে দুটি কমিটির সদস্যদের প্রশ্নফাঁসে জড়তি থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আহসান হাবিব ও নওশাদ নামের দুজন উচ্চমান সহকারিকে খুঁজছে পুলিশ। তাদের বড় ভূমিকা ছিলো প্রশ্নফাঁসে। দুই ঘণ্টা আগেই প্রশ্নফাঁস হয়।
শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাকে মুক্ত করতে তৎপর হয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কয়েকজন। এই চক্রটিই এর আগে প্রদর্শক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করলেও ধরা পড়েনি। শিক্ষা ক্যাডারের এই চক্রটিই ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে জিপিএ ফাইভ বিক্রিতে অভিযুক্ত অদ্বৈতকে মুক্ত করেছিলো। অদ্বৈত এখন অন্য মন্ত্রণালয়ে প্রেষণে নিযুক্ত থেকে বেশি বেশি বেতন নিচ্ছে।
প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, পুলিশের প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। শেকড় সন্ধানী তদন্ত করতে পুলিশকে বলা হয়েছে।
গত শুক্রবার রাজধানীর ৬১ টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়। ৫১৩টি পদের জন্য প্রার্থী ছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার।