বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার শতকরা ১৭ ভাগ কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন। সরকার এই সংখ্যাকে এ বছর ২০ ভাগ ও ২০৪০ সালের মধ্যে ৬০ ভাগে উন্নীত করতে চায়। তাই মাধ্যমিক পর্যায়ের ভোকেশনালসমূহের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (সংশোধনী ২০২০)-এর খসড়া প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনের প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও সহঃ প্রধান নিয়ে কিছু সমস্যা উল্লেখ করা হলো। সোমবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
চিঠিতে আরও জানা যায়, সুপারিনটেনডেন্ট পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রখম বিভাগে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পাসের কথা উল্লেখ রয়েছে, কিন্তু স্নাতক ডিগ্রিধারীদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় শ্রেণির কথা উল্লেখ আছে। ২০১০-এর এমপিও নীতিমালায়ও অনুরূপ ছিল, কিন্তু দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের সংশোধিত নীতিমালায় সবার জন্য দ্বিতীয় বিভাগ অর্থাত্ ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রেও দ্বিতীয় বিভাগ করা হয়। তাই বর্তমান নীতিমালায় ভোকেশনাল শাখার সব স্তরে প্রথম বিভাগের পরিবর্তে দ্বিতীয় বিভাগে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পাসের কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন। ৭-৭-২০১৫ তারিখের মাধ্যমিক স্তরের ভোকেশনাল শাখার খসড়া নীতিমালা ও ২৫-৪-২০১৮ তারিখে প্রকাশিত কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রশিক্ষণের উন্নয়নে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনায় সংযুক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য সহকারী প্রধানশিক্ষক (কারিগরি) পদের কথা উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও বর্তমান ঘোষিত নীতিমালায় বাদ দেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। খসড়া নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনার কথা চিন্তা করে ও সংযুক্ত ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সহকারী প্রধানশিক্ষক (ভোকেশনাল) পদটি পুনরায় সৃজন করা একান্ত প্রয়োজন। এছাড়া সাধারণ শাখায় সহকারী শিক্ষক ও প্রধানশিক্ষক নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রাপ্ত বিভাগ একই; শুধু অভিজ্ঞতা পৃথক এবং একইভাবে কলেজে প্রভাষক ও অধ্যক্ষ নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রাপ্ত বিভাগ একই—অভিজ্ঞতা পৃথক। কিন্তু ভোকেশনাল শাখায় ট্রেড শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানপ্রধান নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও প্রাপ্ত বিভাগ দু ধরনের!
বেসরকারি মাদরাসা এমপিও নীতিমালার ১১.১৩ ধারা অনুযায়ী দাখিল মাদরাসা আলিম স্তরে উন্নীত হওয়ার পরে দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট ও সহকারী সুপারিনটেনডেন্টগণ যথাক্রমে আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে সমন্বিত হবেন এবং অভিজ্ঞতা পূরণ হওয়ার পর অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষর বেতনভাতা প্রাপ্য হবেন। কিন্তু মাধ্যমিক স্তরের ভোকেশনাল শাখা যদি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয় তবে প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের সহকারী সুপারিনটেনডেন্টগণ স্বপদে নিয়োজিত থাকবেন অর্থাত্ তাঁরা সুপারিনটেনডেন্ট ও সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট থাকবেন; এইচএসসি ভোকেশনাল বা এইচএসসি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শাখার অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে সমন্বিত হবেন না। একই বিভাগের দুটি প্রতিষ্ঠানে দু ধরনের নিয়ম! তাই মাদরাসার মতো ভোকেশনাল শাখায় মাধ্যমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হওয়ার পরে মাধ্যমিক ভোকেশনালের সুপারিনটেনডেন্ট ও সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে সমন্বিত হবেন এবং অভিজ্ঞতা পূরণ হওয়ার পর অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের বেতনভাতা প্রাপ্য হবেন মর্মে সংশোধন করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লেখক : রিপন কুমার দাস, ট্রেড ইন্সট্রাক্টর, পটুয়াখালী