প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইনে বদলির নির্দেশিকা সংশোধন জরুরি

মোহাম্মদ আজাদ মিয়া |

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের বদলির আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে গত ১৫ সেপ্টেম্বর। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে এ কার্যক্রম চলবে। এই অনলাইন কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য ছিল বদলি সহজতর করা। কিন্তু ‘সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা ২০২২’ বদলি কার্যক্রম সহজ না হয়ে কঠিন করে দিয়েছে।  

এবার বদলি শুধু উপজেলার ভেতরেই হবে। এক উপজেলা বা জেলা থেকে অন্য উপজেলা বা জেলায় বদলি হওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে উপজেলার মোট শূন্যপদের সংখ্যা যা আছে তা-ই থাকবে। আবেদন ৩০ তারিখ পর্যন্ত করা যাবে। তার মানে ৩০ তারিখের পর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবেদন ফরোয়ার্ড করে জেলায় পাঠাবেন। তারপর সহকারি শিক্ষকদের আবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিষ্পত্তি করবেন। প্রধান শিক্ষকদের আবেদন বিভাগীয় উপপরিচালক বরাবর ফরোয়ার্ড করবেন।

অনলাইন বদলি পোর্টাল অনুসারে, শুধু তালিকার শূন্যপদের স্কুলে বদলি হওয়া যাবে। কিন্তু এক স্কুল থেকে একজন শিক্ষক বদলি হয়ে গেলে বদলিকৃত বিদ্যালয়ের পদ পূরণ হবে। আর যে শিক্ষক বদলি হয়ে গেলেন সেই শিক্ষকের বিদ্যালয়ে পদ শূন্য হবে। এই শূন্যপদে কোন শিক্ষক বদলি হয়ে আসতে পারবেন না। কারণ ইতোমধ্যে বদলির আবেদন করার সময় অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর পেরিয়ে যাবে। তাই, যদি প্রতি ৫ দিন পর পর আবেদনগুলো নিস্পত্তি করা হয়, তবে নতুন নতুন স্কুলে শূন্যপদ সৃষ্টি হবে এবং অন্যরাও বদলি হওয়ার সুযোগ পাবে। তাছাড়া কোন কোন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক বদলির আবেদন করেছেন, নতুন করে কোন কোন বিদ্যালয়ে শূন্যপদ সৃষ্টি হলো, সেসব বিদ্যালয়ে উপজেলার অন্তর্গত কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি হওয়ার আবেদনের সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। এজন্য পোর্টাল আপগ্রেড করা একান্ত জরুরি।
 
৪ শিক্ষকের পদ বিশিষ্ট বিদ্যালয় এদেশে আছে। আবার অনেক স্কুল আছে যেখানে ৪ জন বা তারচেয়েও কম শিক্ষক কর্মরত আছেন। নিয়োগ সাপেক্ষে বদলির অর্ডার করলে যখন নতুন শিক্ষক নিয়োগ হবে, তখন তারা অবমুক্ত হবেন, তাতে বিদ্যালয়ের লেখাপড়ারও ব্যঘাত ঘটবে না।

এছাড়া কোনো বিদ্যালয়ে ১: ৪০ অনুপাতের বেশি শিক্ষার্থী থাকলে ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক ৪ এর অধিক থাকলেও কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু, ১:৪০ হিসেবে শিক্ষার্থী ভর্তির কোন নির্দেশনা নাই। বরং ভর্তিযোগ্য সকল শিশুকে ভর্তি করার নির্দেশনা আছে। তাহলে ১:৪০ এর বেশি শিক্ষার্থী আছে এমন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলিতে সমস্যা থাকা বাঞ্ছনীয় নয়। যদি দেখা যায়, বদলি হয়ে গেলে শিক্ষক কমে যাবে সেক্ষেত্রে নিয়োগ সাপেক্ষে বা বদলি/ প্রতিস্থাপন সাপেক্ষে বদলি করা হলে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা যেমনি বদলি হতে পারবেন, তেমনি শিক্ষার সার্বিক পরিবেশও অক্ষুন্ন থাকবে।

এবারের বদলি নির্দেশিকায় পারস্পরিক বদলি বা মিউচুয়াল ট্রানসফার রাখা হয়নি। দুজন শিক্ষক যদি তাদের নিজেদের সুবিধার জন্য একে অন্যের স্কুলে বদলি হতে চায় তাতে প্রতিষ্ঠানের কোন ক্ষতি হয় না। তাই, অনলাইন বদলি নির্দেশিকায় পারস্পরিক বদলির বিধানটি যুক্ত করা একান্ত প্রয়োজন।

লেখক: সহকারী শিক্ষক, থানাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ওসমানীনগর, সিলেট


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037400722503662