প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, সহকারী শিক্ষকদের জন্য এই মুহূর্তে দশম গ্রেড বাস্তবসম্মত না, তবে প্রস্তাবটা অযৌক্তিক নয়।
রোববার (১৭ নভেম্বর) উপদেষ্টা সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় সহকারী শিক্ষকেরা ১৩তম গ্রেডে আছেন। তারা দশম গ্রেড চাচ্ছেন। প্রধান শিক্ষকেরা এখনো দশম গ্রেড পাননি। সহকারী শিক্ষকদের জন্য এই মুহূর্তে দশম গ্রেড বাস্তবসম্মত না, তবে প্রস্তাবটা অযৌক্তিক নয়। প্রধান শিক্ষকদের গ্রেড ১১তম। সহকারী শিক্ষকরা পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষক হন। তখন গ্রেড পরিবর্তন হবে। আশা করি একদিন পাবে। এ মুহূর্তে বাস্তবসম্মত নয়। সহকারী প্রধান শিক্ষকের ৯ হাজার ৫৭২টি পদ সৃজনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পাওয়া গেছে। সেখানে সহকারী শিক্ষকেরা শতভাগ পদোন্নতি পাবেন।
তিনি বলেছেন, আমাদের দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে উঠেছে; তারা যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য ও দক্ষ। জুলাই-আগস্টের টালমাটাল অবস্থায়ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের ছন্দে পরিবর্তন হয়নি, ভেঙে পড়েনি। সরকারের সংস্কার ও পুনর্গঠন কাজে যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেন। জনগণ ট্যাক্স দেয়, তারা নিরাপত্তা চায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনগণের নিরাপত্তা প্রদানে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবেন। বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা জটিল। ধীরে ধীরে উন্নতি ঘটবে।
আরো পড়ুন: জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে
সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার দেবজিৎ সিংহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবু নুর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান, ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম।
উপদেষ্টা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে আমরা কোনো না কোনোভাবে জড়িত। প্রাথমিক শিক্ষা ঠিকমতো না হলে গোড়ায় গলদ থেকে যায়। প্রাথমিক শিক্ষা ঠিকমতো চলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবেন। এলজিইডি আমাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করার ক্ষেত্রে জড়িত আছে। আপনারা ঠিক সময়মত মানসম্মত অবকাঠামো তৈরি করবেন।
তিনি আরো জানান, একটি গবেষণায় উঠে এসেছে-প্রাথমিক শিক্ষায় ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে সিলেট অঞ্চল পিছিয়ে আছে। আমাদের বিপুল জনশক্তি রয়েছে। জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তরে সিরিয়াসলি কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি কখনো। যদি নেয়া হতো ডেফিনেটলি এ অবস্থায় থাকতো না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা জানান, বিগত কয়েক বছর থেকে ১ জানুয়ারি বই উৎসব করে আসছে। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি জানুয়ারিতে বই দেয়ার। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পাঠ্যপুস্তকে কিছুটা পরিমার্জন হয়েছে। প্রাথমিকের বই ছাপানোর ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়েছে। আশা করি জানুয়ারিতে প্রাথমিকের বই পৌঁছে দিতে পাররো।
উপদেষ্টা পরে একই স্থানে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। দুপুরে উপদেষ্টা সিলেটে গ্রান্ড হোটেলে ওয়ার্কশপ অন ডিজাইনিং ফর দ্য নেক্সট সেক্টর প্রোগ্রাম পিইডিপি-৫’ এ বক্তৃতা করেন। এরপর উপদেষ্টা সিলেট পিটিআই পরিদর্শন।