গাজীপুরে একজন শিক্ষক ও শিক্ষিকা প্রেমের টানে উধাও হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের ভূমিকায় সাধারণ শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঘটনাটি ঘটেছে মহানগরীর টঙ্গী সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির দিবা শাখার একজন শিক্ষিকা মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। অধ্যক্ষ কারোর সাথে পরামর্শ না করেই ওই শিক্ষিকার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে তার পছন্দের একজন শিক্ষিকাকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেন। দুই সন্তানের জননী ওই শিক্ষিকা স্কুলটিতে শিক্ষকতার সুযোগ পেয়েই অল্প কয়েক দিনের মধ্যে বিভিন্ন বিতর্কের জন্ম দেন।
ইতঃপূর্বেও দ্ইুজন শিক্ষকের সাথে তার মন দেয়া-নেয়ার ঘটনা ফাঁস হলে তাদেরকে সতর্ক করা হয়। অবশেষে তৃতীয় আরেকজন শিক্ষকের প্রেমে জড়িয়ে পড়েন ওই শিক্ষিকা। একপর্যায়ে গত ২৫ জানুয়ারি স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দিন সবার অজান্তে তারা উধাও হয়ে যান। এর পর থেকে তাদের আর কোনো হদিস মিলছিল না। গত ২৮ জানুয়ারি স্কুলের বার্ষিক বনভোজনেও তারা অনুপস্থিত ছিলেন। এরই মধ্যে তারা ঢাকায় গিয়ে কোর্টম্যারেজ করেছেন বলে সহকর্মীদের কাছে খবর আসে। অপর দিকে শিক্ষিকার স্বামী স্কুলে গিয়ে আলোচিত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে নালিশ করেন এবং দু’টি সন্তানের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে তার স্ত্রীকে ফেরত দেয়ার আকুতি জানান। তবে রহস্যজনক কারণে অধ্যক্ষ এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। বরং ‘পুরস্কার’ হিসেবে ইংরেজি বিষয়ের আলোচিত ওই শিক্ষককে নতুন কারিকুলামের জন্য বাছাই করে প্রশিক্ষণে পাঠান।
দিবা শাখার সহকারী শিফট ইনচার্জ ইয়াসমিন নাহারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওই শিক্ষিকার স্বামী যখন নালিশ নিয়ে আমাদের কাছে এসেছিলেন তখন আমরা স্পোর্টস নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এর পর স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরে কী হয়েছে তা জানা নেই।’
অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আপনারা এত দ্রুত খবর পান কিভাবে? আলোচিত শিক্ষিকা স্কুলের নিয়মিত শিক্ষক নন দাবি করে তিনি বলেন, ‘সে ইংরেজিতে খুব ভালো। তাই মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকা একজন শিক্ষিকার প্রক্সি কর্মী হিসেবে তাকে মৌখিকভাবে নিয়োগ দিয়েছিলাম।’ বর্তমানে আলোচিত শিক্ষক-শিক্ষিকা কোথায় আছেন জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, স্কুল খুলার পর জানা যাবে।
এ দিকে এ ব্যাপারে আলোচিত শিক্ষকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, ‘যা শুনছেন এসব কিছুই না, সবই গুজব ও মিথ্যা।’ কোথায় আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন ট্রেনিংয়ে আছি।’ এর পর তিনি আর কিছু না বলে দ্রুত ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে আলোচিত শিক্ষিকার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।