প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সিনিয়রের হুমকির শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। আর এ ঘটনায় অভিযুক্ত ফারুক হোসেন মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায়র বিচার চেয়ে বিশ্ববিদালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
এর আগে মঙ্গলবার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে বিষয়টি জানিয়ে স্ট্যাটাস পোস্ট করেন। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠে। এরপর ওই স্ট্যাটাস মুছে ফেলার জন্য অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ওই ছাত্রীকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পর থেকেই ফারুক হোসেন তাকে সরাসরি ও ম্যাসেঞ্জারে বিরক্ত করে আসছেন। করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার আগেও বেশ কয়েকবার কুপ্রস্তাব দেয় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন হুমকিও দিতেন ফারুক। এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার সহপাঠীদের জানায়। এর কিছুদিন পরেই করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায়।
পরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকাকালীন সেপ্টেম্বর মাসের দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসলে ফের ফারুক তার পিছু নেয় এবং নানা কুপ্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে তা মুছে ফেলার জন্য হুমকি দেন ও ক্যাম্পাসের ছাত্রলীগ নেতাদের ও বড় ভাইদের পরিচয় দিয়ে ভয় দেখান ফারুক। এছাড়া প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি ফটোশপের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে ছবি বিকৃতি করে ভুক্তভোগীর সহপাঠী ও সিনিয়রদের কাছে আজেবাজে ছবি পাঠায়। এছাড়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকেও বাজে ছবি এবং ভিডিও পাঠান অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থী। এঘটনা ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিভিন্ন বিভাগের আরও অন্তত ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফারুকের বিচার ও তাকে বহিষ্কারের দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া এর বিচার চেয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কয়েকটি সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসভ করেননি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘এই ঘটনায় আমি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছি। সেই সাথে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার নামে খারাপ আইডি খোলা ও কুপ্রস্তাব হুমকি ধামকির ঘটনার প্রতিকার চাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ভিসি স্যারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। তিনি আমলে নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর পূর্ণ পরিচয় নিশ্চিত হতে না পারায় কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছেনা। অভিযুক্ত ছাত্রের সাথেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ঈদের ছুটির পর অফিস খুললে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন