ফরিদপুর সদরের পৌরসভার নির্বাচনের কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এ আদেশের ফলে নির্বাচনী কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ছিল। বুধবার (২৫ নভেম্বর) এক রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
পৌরসভার নির্বাচন স্থগিতের পাশাপাশি ফরিদপুর পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশন হিসেবে উন্নিতকরণ প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায় গত ৩ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণাকে কেন বেআইনী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর ফরিদপুর পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত চেয়ে পৌরসভার বর্ধিত এলাকার ভোটার মো. আতিয়ার রহমান রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দিলেন। আইনজীবীরা জানান, ফরিদপুর পৌরসভার নির্বাচন ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, একটি পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশন করতে যা যা করা দরকার প্রশাসন তার সবই করেছে। এমনকি গত বছর ২১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনবিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) ১১৬ তম সভার প্রধান আলোচ্য সূচি ছিল ফরিদপুর সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা।
ওই সভায় বিদ্যমান ফরিদপুর পৌরসভা এবং সম্প্রসারিত এলাকা নিয়ে ফরিদপুর সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন ফরিদপুর পৌরসভা নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে। নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আজ ফরিদপুর পৌরসভা নির্বাচন ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন।
গতকাল ২৪ নভেম্বর সকালে কবি জসিম উদ্দীন হলে ফরিদপুর পৌরসভার প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। এসময় মেয়র প্রার্থী ছাড়াও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ও কাউন্সিলররা তাদের সমর্থকদের নিয়ে উপস্থিত হন। আগামী ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ফরিদপুর পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ চারজন প্রার্থী, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৫২ জন ও কাউন্সিলর পদে ১৯৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল।
২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে দেশের সর্ববৃহৎ এলাকা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৪৮ হাজার ৩১৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭১ হাজার ৭৮৬ এবং নারী ভোটার ৭৬ হাজার ৫৭১ জন।