ফাজিলের তৃতীয় বিভাগ নিয়ে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে বিভিন্ন মাদরাসায় সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত প্রার্থীদের চূড়ান্ত নিয়োগ সুপারিশ করবে না বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। সনদ যাচাই করে তাদের বাদ দেয়া হচ্ছে। কয়েকশ নিবন্ধিত প্রার্থী ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগে জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তাদের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান এনটিআরসিএর কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, সহকারী মৌলভী পদটি মূলত মাদরাসার ধর্ম বিষয়ের শিক্ষক পদ। স্কুলের এ বিষয়ে শিক্ষককে ধর্ম বিষয়ের সহকারী শিক্ষক বলা হলেও মাদরাসায় এ পদটির নাম সহকারী মৌলভী। তবে, এ দুই পদে নিবন্ধন প্রক্রিয়া একই। একই শিক্ষক নিবন্ধন সনদ নিয়ে ধর্ম বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগ সুপারিশ পেতে আবেদন করার সুযোগ পান নিবন্ধিত প্রার্থীরা।
এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা বলেছেন, একই নিবন্ধন সনদে আবেদনের সুযোগ দেয়া হলেও স্কুল ও মাদরাসায় ধর্ম শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতায় অসামঞ্জস্যতা আছে। মাদরাসার বিদ্যমান এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সহকারী মৌলভী পদের জন্য সর্বশেষ ডিগ্রি বা ফাজিলে তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য না, তবে সর্বশেষ স্তর ছাড়া অন্যান্য স্তরের যেকোনো একটিতে তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু স্কুলের এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী একই শিক্ষাগত ডিগ্রি নিয়ে ধর্ম শিক্ষক হতে সমগ্র শিক্ষা জীবনে যেকোনো একটি তৃতীয় শ্রেণি বা বিভাগ গ্রহণযোগ্য। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বহু প্রার্থী ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছেন। নিয়োগ সুপারিশের আগে যাচাই বাছাই করতে তাদের সনদ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে, যারা ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ পেয়েছেন তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমরা চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন নিয়েছি বিদ্যামান এমপিও নীতিমালা অনুসারে, যা গণবিজ্ঞপ্তি উল্লেখ ছিলো। সে অনুযায়ী প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করা হবে। বিদ্যমান নীতিমালায় যে পদে নিয়োগ যোগ্যতা যেভাবে আছে সেভাবেই আমরা প্রার্থীদের চূড়ান্ত সুপারিশ করবো। এ ক্ষেত্রে এনটিআরসিএর কিছুই করার নেই। নীতিমালা তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। তারা যে যোগ্যতা নির্ধারণ করে নীতিমালা প্রস্তুত করেন সেভাবেই এনটিআরসিএ প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করে থাকে।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএর নিয়োগে সংক্রান্ত দায়িত্বে থাকা একজন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে সহকারী মৌলভী পদে প্রার্থীদের সুপারিশ করা হবে না। এমপিও নীতিমালা অনুসারে আমরা চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন নিয়েছি, সেভাবেই নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হবে।
এদিকে ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত বেলাল হোসাইন নামের এক প্রার্থী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, একই নিবন্ধন সনদ নিয়ে আমরা স্কুলের ধর্ম বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও সহকারী মৌলভী পদে আবেদন করি। ধর্ম বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হতে যেকোনো একটি তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য হলেও সহকারী মৌলভী হতে সর্বশেষ ডিগ্রি বা ফাজিলে তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য না করা একটি বৈষম্য। আমরা মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের গিয়ে কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানালে তারা এটিকে বৈষম্য বলছেন। আমরা ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে সহকারী মৌলভী পদে নির্বাচিত হওয়া প্রার্থীরাও নিয়োগ সুপারিশ চাই। এ বিষয়টি সমাধান করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।