ফারদিনের মৃত্যু মাথায় আঘাতে, আদালতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন জমা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূরের মৃত্যু হয়েছে মাথায় আঘাত পেয়ে। তাঁর মাথায় যে আঘাত রয়েছে, সেটা ভারী কোনো বস্তুর সঙ্গে আঘাতের কারণে হয়েছে। ফারদিনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকেরা আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন।

এদিকে ভিসেরা প্রতিবেদনেও ফারদিনের শরীরে বিষ বা রাসায়নিক কোনো কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে ফারদিনের পরিবারের দাবি, চিকিৎসকেরা তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সুরেই কথা বলছেন।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন মশিউর রহমান গতকাল বলেন, ‘ফারদিনের ময়নাতদন্ত শেষে আমরা আগে যেটা বলেছিলাম, সেটাই আছে, আঘাতের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’ তিনি বলেন, তাঁর ভিসেরা প্রতিবেদনেও বিষ বা রাসায়নিক কোনো কিছু কিছু পাওয়া যায়নি।

ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন, তদন্ত সংস্থার এমন ভাষ্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন মশিউর রহমান বলেন, ওপর থেকে লাফ দিয়ে পড়ে কোনো ভারী বস্তুর সঙ্গে আঘাত পেয়ে তাঁর শরীরে আঘাতগুলো সৃষ্টি হয়েছে—এ কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন গতকাল বলেন, ‘চিকিৎসক, মামলার তদন্ত সংস্থা ও ছায়া তদন্তকারীরা এখন একই সুরে কথা বলছেন। এটা আমার পরিবার ও ছেলের প্রতি অবিচার।’

মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবির কর্মকর্তারা বলেন, চিকিৎসকেরা ময়নাতদন্ত, ভিসেরা প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁরা প্রতিবেদন পাননি। তবে ফারদিনের ব্যবহৃত মুঠোফোনের ফরেনসিক প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। অল্প সময়ের মধ্যে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে বলে জানান কর্মকর্তারা।

এর আগে ফারদিনের সহপাঠীরা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, তদন্তকারীরা আত্মহত্যার কথা বলার পর তাঁদের মনে পাঁচটি প্রশ্ন জেগেছিল। ডিবি ও র‌্যাবের কাছে সেসব বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন তাঁরা। দুটি সংস্থাই তথ্যপ্রমাণ দিয়ে তাঁদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। এখন সন্দেহ করার মতো আর কোনো বিষয় নেই।

শিক্ষার্থীরা ডিবি ও র‍্যাবের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসক বলেছিলেন ফারদিনের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাহলে এখন কীভাবে আত্মহত্যা হলো? পরবর্তী সময়ে র‍্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ ওই ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছে, ফারদিনের শরীরে থাকা আঘাতগুলো সেতু থেকে লাফ দেওয়া কিংবা পানির আঘাত ও স্প্যানের আঘাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বুয়েট ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা বলে গত ৪ নভেম্বর ঢাকার ডেমরার কোনাপাড়ার বাসা থেকে বের হন ফারদিন। ওই দিনই তিনি নিখোঁজ হন। পরদিন ৫ নভেম্বর রামপুরা থানায় জিডি করেন তাঁর বাবা কাজী নূর উদ্দিন। নিখোঁজের তিন দিন পর ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। এ ঘটনায় ফারদিনের বাবা মামলা করেন। মামলায় ছেলের এক বন্ধুকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ড শেষে কারাগারে আছেন তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি - dainik shiksha আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ - dainik shiksha শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার - dainik shiksha মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ - dainik shiksha শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন - dainik shiksha অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031518936157227