কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরীসহ পাঁচ শিক্ষার্থী সশরীর উপস্থিত থেকে বক্তব্য দিয়েছেন।
আত্মপক্ষের সমর্থনের অংশ হিসেবে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যদের কাছে এ বক্তব্য দেন তাঁরা।
অভিযুক্ত পাঁচজনের বক্তব্য শোনার পর ভুক্তভোগী ফুলপরীরও বক্তব্য নেন তাঁরা। এ সময় সভায় উপাচার্য শেখ আবদুস সালাম, সহ–উপাচার্য মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হোসেন, প্রক্টর শাহাদৎ হোসেন, ছাত্র উপদেষ্টা শেলীনা নাসরীনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত বহিষ্কৃত পাঁচ ছাত্রীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যসচিব শাহাদৎ হোসেন বলেন, লিখিত বক্তব্য ছাড়াও অন্য কোনো বক্তব্য আছে কি না, তা জানতে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মোয়াবিয়া জাহান ও হালিমা খাতুন নতুন বক্তব্য সংযোজন করেছেন। অন্যরা আগের দেয়া বক্তব্যে অটল থাকেন।
শাহাদৎ হোসেন আরও বলেন, ঈদের ছুটি শেষে তাঁদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাইকোর্ট আগামী ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে সব কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা তাঁকে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল ও ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় রিট হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি কিছু নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
ঘটনাটি নিয়ে দুটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন। নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত বলে তদন্ত প্রতিবেদনে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীসহ পাঁচ ছাত্রীকে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে সাময়িক বহিষ্কার করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। এ ঘটনায় হলের প্রাধ্যক্ষ শামসুল আলমকে প্রত্যাহার করতে নির্দেশ দেয়া হয়।