ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় ছাত্রকে চেয়ারম্যানের শোকজ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি : চলমান তীব্র দাবদাহ ও গরমের মধ্যে ছুটির দিনে চূড়ান্ত বার্ষিক পরীক্ষার তারিখ ঠিক করা নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে শোকজ করার ঘটনা ঘটেছে। 

সোমবার (২২ এপ্রিল) আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ ওই শিক্ষার্থীকে কল দিয়ে মৌখিকভাবে শোকজ করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে হাজির হয়ে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে বলেন। এছাড়া, সঠিক ব্যাখ্যা না দিতে পারলে তিনি শাস্তি প্রদানের, এমনকি বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তোলারও হুমকি দেন বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী একটি লিখিত জবাবও দিয়েছেন।

জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মুনমুন মেহেজাবীন। তিনি আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ক্লাস রিপ্রেজেনটেটিভের (সিআর) দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী ৪ ও ২৫ মে (শনিবার) তাদের তৃতীয় বর্ষের ২টি ফাইনাল পরীক্ষা রাখার ব্যাপারে গত ২১ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি পোস্ট দেন তিনি। যার প্রেক্ষিতে, বিভাগের চেয়ারম্যান কর্তৃক এই শোকজের ঘটনাটি ঘটে।

২১ এপ্রিল ফেসবুক পোস্টে ওই শিক্ষার্থী লিখেন, এই গরমে যখন দিন দুনিয়া বন্ধ করে দিচ্ছে তখন প্রিয় ডিপার্টমেন্ট ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছে৷ সেদিক, সমস্যা নেই। কিন্তু দুইটা পরীক্ষা দিয়েছে শনিবারে। মানে যেদিন ইউনিভার্সিটির বাস বন্ধ। সুদূর উত্তরা, টঙ্গী, মিরপুর, মোহাম্মদপুর থেকে আমরা ৪২° সেলসিয়াসে লোকাল বাসে ঝুলে ঝুলে আসব চিন্তা করেই আনন্দ লাগছে।

ঘটনার বর্ণনায় মুনমুন মেহেজাবীন বলেন, তীব্র গরমের মধ্যে ছুটির দিনে পরীক্ষা নেওয়া প্রসঙ্গে গত ২১ এপ্রিল ফেসবুকে আমি একটা পোস্ট করেছিলাম। এতে কারও কোনো নাম বা আমাদের ডিপার্টমেন্টের নাম এসব কিছুই উল্লেখ করিনি। এর মাধ্যমে চেয়ারম্যান স্যার বা অ্যাকাডেমিক কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আমি কোনোরকম অশ্রদ্ধা বা বিদ্বেষ প্রকাশ করিনি। শুধু এ রকমটা লিখেছি যে, শনিবারে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো বন্ধ থাকে। এই গরমের মধ্যে লোকাল বাসে করে এতদূর থেকে আমরা আসব, এটা ভেবেই ভালো লাগতেছে। এ কারণেই আমাদের বিভাগের চেয়ারম্যান স্যার পরের দিন আমাকে কল দিয়ে আমার ওই পোস্টের লিখিত ব্যাখ্যা চান এবং এক্ষেত্রে তিনি সাত দিনের সময় বেঁধে দেন। 

তিনি জানান, আমি যদি এর সঠিক ব্যাখ্যা না দিতে পারি, তাহলে আমার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি আমার ব্যাখ্যা প্রস্তুত করে জমা দিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য না করে অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন। এ সময় তিনি বলেন,

আমার বিভাগের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কী হয়েছে সে বিষয়ে আপনার কাছে বলব কেন? আপনি কে? কিছু জানানোর প্রয়োজন থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে জানাব। এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে আমার কোনো কথা নেই। এই বলে তিনি কলটি কেটে দেন।

প্রসঙ্গত, ছুটির দিন হিসেবে শুক্র ও শনিবার এই দুইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস সার্ভিস বন্ধ থাকে। ফলে, দুর্ভোগে পড়েন দূরবর্তী স্থানে থাকা শিক্ষার্থীরা। এদিকে, গত ২১ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, সারা দেশের ওপর দিয়ে প্রবাহমান তীব্র দাবদাহের (হিট ওয়েভ) কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রচলিত ১০ শতাংশ অনলাইন ক্লাসের পরিবর্তে শতভাগ অনলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। তবে এ সময়ে পরীক্ষাসমূহ যথারীতি চলমান থাকবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023119449615479