দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক : আধুনিক নার্সিং স্বাস্থ্য পরিচর্যার অগ্রদূত ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন ও আন্তর্জাতিক নার্স দিবস আজ। ১২ মে তার জন্মদিন উপলক্ষেই এ দিবস পালিত হয়। যিনি আধুনিক নার্সিং সেবার অগ্রদূত, লেখক ও পরিসংখ্যানবিদ। যাকে ‘দ্য লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প’ বলা হয়। নার্সিংয়ের ক্ষেত্রে তার যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলো সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে কাজ করেছে।
ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল ১৮২০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে ইতালির ফ্লোরেন্স নগরীর এক অভিজাত ও ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা-মাতা ছিলেন উইলিয়াম শোর নাইটিঙ্গেল ও ফ্রান্সেস নাইটিঙ্গেল। খুব অল্পবয়স থেকেই ফ্লোরেন্স সমাজসেবা ও মানবসেবায় নিজের ভূমিকা রেখেছেন।
যখন কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে এই সংক্রামক ব্যাধি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে তখন নাইটিঙ্গেল হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উন্নতির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকেন ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যা লক্ষণীয়ভাবে কমাতে সাহায্য করেন।
ক্রিমিয়ান যুদ্ধে আহত সৈন্যদের সেবার মাধ্যমে নার্সিংকে তিনি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। হ্যারিকেন নিয়ে রাতের আঁধারে তিনি ছুটে গেছেন আহতদের দ্বারে দ্বারে। এরপর থেকেই বিশ্ব তাকে ‘দ্য লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প’ ডাকতে শুরু করে। যুদ্ধের পর ফ্লোরেন্স বহু দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
মানুষের সেবায় তার দৃষ্টান্তমূলক অবদানের জন্য ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে রানি ভিক্টোরিয়া তাকে ‘রয়েল রেডক্রস’ সম্মানে সম্মানিত করেন। ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম নারী হিসেবে ‘অর্ডার অব মেরিট’ সম্মানে সম্মানিত হন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে পান লন্ডনের ‘অনারারি ফ্রিডম’ উপাধিও। ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বহু মনীষী ফ্লোরেন্সকে ঈশ্বরের দূত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এখন যারা এ পেশায় নতুন আসেন তারা ‘নাইটিঙ্গেল প্লেজ’ নামে একটি শপথ গ্রহণ করে তার প্রতি সম্মান জানান। তার সম্মানেই ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১২ মে পালিত হয়ে আসছে ‘ইন্টারন্যাশনাল নার্সেস ডে’।