দৈনিক শিক্ষাডটকম, জবি : শুরু হয়েছে অমর একুশে বই মেলা। প্রতিবছরের ন্যায় এবারো মেলায় অংশ নিচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এবারের নতুন প্রকাশিত বইয়ের মাত্র তিনটি। এছাড়া প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি বই। এবারের প্রকাশিত বই তিনটি হলো রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নঈম আকতার সিদ্দিকের লেখা 'বাংলাদেশের স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়নে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা', ইতিহাস বিভাগের সম্পাদিত গ্রন্থ 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও বাংলাদেশ' ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ইব্রাহীম খলিলের 'ভোলা জেলার মানতা সম্প্রদায়ের জীবন ও ধর্মঃ সমীক্ষা'।
বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে বই প্রকাশনার কাজ শুরু করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর ২০১৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে নিজস্ব নামে বই মেলায় স্টল দিয়ে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এদিকে প্রকাশনা শুরুর পর থেকে প্রতি বছর বইমেলায় স্টল বসলেও বছরের বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা সেল। বই প্রকাশের ক্ষেত্রেও রয়েছে ধীরগতি। গত বছর নতুন প্রকাশিত কোনো বই ছাড়াই মেলায় স্টল বসলেই এবারে নতুন তিন বই নিয়ে স্টল বসছে। প্রকাশনা শুরুর পর আট বছর পার হলেও এ যাবতকালে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা মাত্র ২৭ টি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা সেল বন্ধ থাকার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা সেল সমন্ধে অনেক শিক্ষার্থীরই অজানা। বিশেষ দিন ছাড়া এটি খোলা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেক শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরে অধ্যায়নরত এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর পার করে ফেলেছি কিন্তু প্রকাশনা সেল সম্পর্কে কিছুই জানতে পারলাম না। বেশ কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা প্রোগ্রামে দেখি রফিক ভবনের নিচে ছোট একটি দোকান। খুব কমই এটি খোলা থাকতে দেখেছি।
বই প্রকাশে ধীরগতি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. চঞ্চল কুমার বোস বলেন, আমাদের প্রকাশনা ক্ষেত্রে বাজেটের একটা বিষয় রয়েছে। এছাড়াও প্রকাশনার ক্ষেত্রে বইগুলো যেহেতু বেশিরভাগ গবেষণাধর্মী, এগুলো প্রকাশের আগে রিভিউয়ার দিয়ে দেখানো হয়। এক্ষেত্রে মানসম্মত পান্ডুলিপি পাওয়া একটা ব্যাপার। এছাড়াও রিভিউ থেকে শুরু করে বই আকারে বের করতে অনেক সময় লেগে যায়। বিশেষ করে রিভিউয়াররা বেশি সময় নিয়ে ফেলে। বার বার তাদেরকে তাগিদ করেও পাওয়া যায় না। নাহলে হয়তো আমাদের বই প্রকাশের সংখ্যা আরো বেশি হতে পারতো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা সেল বন্ধ থাকার বিষয়ে অধ্যাপক চঞ্চল কুমার বোস বলেন, আমাদের লোকবল সংকটের কারনে মাঝে মাঝে এটা বন্ধ থাকে। এটা সবসময় খোলা রাখার জন্য একজন পার্মামেন্ট লোক দরকার। যারা আছেন তাদেরকে নির্দেশনা দেয়া আছে যে কাজের চাপ কম থাকলেই তারা যেন খোলা রাখে। এছাড়া আমরা একজন পার্মানেন্ট লোক পেলেই এটা নিয়মিত খোলা রাখা সম্ভব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, নবীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ যাত্রা চমৎকার। বই মেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টল থাকে না। সেদিক থেকে আমরা এগিয়ে। অনেক সংকট থাকা সত্ত্বেও আমরা আরো ভালো করার চেষ্টা করছি।
প্রসঙ্গত, এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টলের নকশা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মীর সাব্বির।