বঙ্গবন্ধুর খু*নির ছয় সন্তান বাবার নাম পাল্টে এনআইডি করেছেন

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

বঙ্গবন্ধুর খুনি রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের ছয় সন্তান বাবার নাম পরিবর্তন করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনকে এ তথ্য জানিয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে পাঠানো চিঠি, গত সোমবার নির্বাচন কমিশনে পৌঁছেছে। জানা গেছে, মোসলেম উদ্দিনের ৬ ছেলে-মেয়ে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবার নাম পরিবর্তন করে মো. রফিকুল ইসলাম খান উল্লেখ করেছেন। 

রিসালদার মোসলেম উদ্দিন

সেই পরিচয়পত্রের মাধ্যমে তিন সন্তান পাসপোর্টে এবং আরেকজন ড্রাইভিং লাইসেন্সেও বাবার নাম বদল করে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট এবং অন্যান্য জাতীয় ডেটাবেজে তাদের বাবার নাম পরিবর্তনের বিষয়টি, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।

চিঠি অনুযায়ী মোসলেম উদ্দিনের ছয় সন্তান হলেন, মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম খান, মাহমুদুল ইসলাম খান, মজিদুল ইসলাম খান, মো. মহিদুল ইসলাম খান, মো. সাজিদুল ইসলাম খান এবং সানাজ খাঁন। এর মধ্যে শফিকুল, মহিদুল ও সানাজ তাঁদের পাসপোর্টেও বাবার নাম পরিবর্তন করেছেন। আর মাহমুদুল ইসলাম তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্সে বাবার নাম পরিবর্তন করেছেন। 

দেশের প্রচলিত আইনে জাতীয় পরিচয়পত্রে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত। এর জন্য অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে। 

১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগষ্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। সে সময় বিদেশে অবস্থান করায় তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান। এরপর দীর্ঘদিন দায়মুক্তি অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার ঠেকিয়ে রাখা হয়েছিল। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর দায়মুক্তি অধ্যাদেশ বাতিল হয় এবং হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ খোলে।   

দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ৮ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকার দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার দায়ে ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে উচ্চ আদালত ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।

২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ জানুয়ারি সৈয়দ ফারুক রহমান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও মুহিউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। আরেক হত্যাকারী আজিজ পাশা ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের জুনে জিম্বাবুয়েতে মারা যান।

পলাতক আসামিদের মধ্যে আবদুল মাজেদকে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৬ এপ্রিল রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার হয় এবং ১১ এপ্রিল রাতে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।

বাকি হত্যাকারীদের মধ্যে এম বি নূর চৌধুরী কানাডায় এবং রাশেদ চৌধুরী আমেরিকায় অবস্থান করছেন। তাদের দেশে ফিরিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে অনেক দিন ধরেই কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে। 

এছাড়া হত্যাকারীদের অন্যতম খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের অবস্থান সম্পর্কে সরকারের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ - dainik shiksha শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045340061187744