বঙ্গবন্ধুর চালু করা কোটায় নিয়োগ বন্ধ ১৬ বছর

এনামুল হক প্রিন্স, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

দশ শতাংশ কোটায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে গত ১৬ বছর ধরে। ভালো একাডেমিক রেজাল্ট নিয়ে বেসরকারি কলেজে কর্মরত শিক্ষকদের সরকারি কলেজে শিক্ষকতার সুযোগ দেয়ার লক্ষ্যে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২০ শতাংশ কোটা চালু করেন। এরশাদের আমলে কোটা ২০ শতাংশ কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। পরে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষ দিকে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষ দিকে ওই দশ শতাংশও বাতিল করা উদ্যোগ শুরু হয়। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের তত্ত্বাবধায়ক আমলের শেষ দিকে শিক্ষা প্রশাসনে জেঁকে বসা থাকা জামায়াতের ক্যাডাররা ওই কোটায় নিয়োগ বন্ধ করে দিতে সক্ষম হয়।  

তারপর শিক্ষা ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন বিগত বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে দশ শতাংশ কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যাপকরা। বর্তমানে শিক্ষার বিভিন্ন অধিদপ্তর, দপ্তর, বোর্ড এবং সরকারি কলেজ ও মাদরাসায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক কর্মরত। আর মোট জনবলের ১০ শতাংশ কোটায় নিযুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে এই ক্যাটাগরিতে মাত্র একশোর মতো কর্মরত আছেন। তাদের মধ্যে ৫০ জনের মতো আবার পদোন্নতি জটিলতায় আটকে আছেন। আওয়ামী লীগ বিদ্বেষী মনোভাব ও ক্যাডারের কতিপয় সদস্যের প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাবের কারণে কোটায়  নিয়োগ বন্ধ বলে অভিযোগ উঠেছে।

শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে এ তথ্য জানা গেছে। 

প্রসঙ্গত, কোটা প্রক্রিয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে চাহিদা পেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে (পিএসসি) জানায়। পিএসসি বিজ্ঞাপন দিয়ে মৌখিক পরীক্ষা ও একাডেমিক ফলের বিচারে প্রার্থী চূড়ান্ত করে। স্নাতক পর্যায়ের কলেজে কমপক্ষে দশ বছর কর্মরতরা আবেদনের সুযোগ পান। সহকারি, সহযোগী ও অধ্যাপক পদে নিয়োগ হয়। পিএইচডি/ এমফিলসহ প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরাই শুধু আবেদন করতে পারেন।

গত ১৬ বছর ধরে কোটায় নিয়োগ বন্ধ কেনো এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি বিএনপি-জামায়াত আমলে ১০ শতাংশ কোটায় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ২০১৮ থেকে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে থাকা অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক। বর্তমানে তিনি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবে কর্মরত।

গোলাম ফারুকের মহাপরিচালক হন অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। দৈনিক আমাদের বার্তার এক প্রশ্নের জবাবে দৈনিক আমাদের বার্তাকে তখন তিনি বলেন, আমি কয়েকমাস আগে মহাপরিচালক হলাম। দেখি খোঁজ নিয়ে কেনো এতো বছর বন্ধ ছিলো।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কলেজ শিক্ষক হাবিবুর রহমানের মতে, নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে গত ১৬ বছরে ১০ শতাংশ কোটায় কমপক্ষে তিনশ শিক্ষক নিয়োগ পেতেন। সারাদেশের কলেজগুলো রয়েছে চরম শিক্ষক সংকটে। সরকারের উচিত বঙ্গবন্ধুর চালু করা কোটায় নিয়োগ চালু করে শিক্ষক সংকট কিছুটা হলেও দূর করা।   


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর - dainik shiksha শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী - dainik shiksha আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে - dainik shiksha জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ - dainik shiksha বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - dainik shiksha এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা - dainik shiksha অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর - dainik shiksha ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন - dainik shiksha বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী - dainik shiksha একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030460357666016