দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বিশ্বে বছরে ৩০ কোটি ২০ লাখ শিশু যৌন নিগ্রহ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গত এক বছরে প্রতি ৮ শিশুর মধ্যে একজন শিশুর আপত্তিকর ছবি নেওয়া হচ্ছে অনুমতি ছাড়া। এসব ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। এমনকি শিশুরা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে আপত্তিকর ছবির মুখোমুখিও হচ্ছে।
সোমবার (২৬ মে) প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরার চাইল্ডলাইট গ্লোবাল চাইল্ড সেফটি ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ইন্টারনেট জগৎ শিশুদের জন্য নিরাপদ নয়, এমনটাই উঠে এসেছে গবেষণায়। যুক্তরাজ্যের এই গবেষকেরা বলছেন, যেসংখ্যক শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে, ঠিক একই সংখ্যক শিশুকে যৌন নিগ্রহ করার চেষ্টাও হয়েছে। এই শিশুদের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্করা তাদের আপত্তিকর বার্তা দিয়েছেন, কোনো শিশুকে যৌনাচারে লিপ্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করেও শিশুদের হেনস্তা করার বিষয়ে গবেষণায় বলা হয়েছে, এআই ব্যবহার করে তৈরি করা হচ্ছে শিশুর আপত্তিকর ছবি। এসব ছবি তৈরি করে শিশুর কাছে অর্থ দাবি করা হচ্ছে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে এমন হয়েছে, আপত্তিকর ছবি তুলে সেই ছবি গোপন রাখার শর্তে অর্থ দাবি করা হয়েছে।
গবেষকেরা বলছেন, সারা বিশ্বে এমন ঘটনা ঘটছে। তবে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শিশুরা। দেশটির প্রতি ৯ জনে ১ জন প্রাপ্তবয়স্ক স্বীকার করেছেন, তাঁরা শিশুদের সঙ্গে এমন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করেছেন অনলাইনে।
চাইল্ডলাইট গ্লোবাল চাইল্ড সেফটি ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী পল স্ট্যানফিল্ড বলেন, শিশু নির্যাতনের ঘটনাগুলো খুবই স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে এসেছে। এর কারণে যেসব প্রতিষ্ঠান শিশুদের সুরক্ষায় কাজ করে থাকে বা যেসব নিরাপত্তা সংস্থা শিশু নিরাপত্তায় কাজ করে, তাদের কাছে গড়ে প্রতি সেকেন্ডে একটি অভিযোগ জমা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এটা বৈশ্বিক মহামারি আকার ধারণ করেছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে আমাদেরকাছে গোপন ছিল।
শিশুদের ওপর এমন যৌন নির্যাতনের ঘটনা সব দেশেই ঘটছে। ভয়ংকরভাবে এই অপরাধ বাড়ছে। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে বৈশ্বিক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’
সম্প্রতি ব্রিটিশ পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কিশোরদের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে এমন অপরাধ বাড়ছে। অপরাধীরা কিশোরদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরপর বিভিন্ন বার্তা সরবরাহের অ্যাপ ব্যবহার করে যোগাযোগের পর ফাঁদে ফেলা হচ্ছে শিশুদের।
শিশুদের অনুমতি ছাড়া আপত্তিকর ছবি তোলা এবং সেগুলো ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এআই ব্যবহার করে শিশুদের ডিপফেক তৈরি। যুক্তরাষ্ট্রের শিশুরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে।