বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লতাগুল্ম-পোকামাকড়ের বাসা

কুমিল্লা প্রতিনিধি |

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে গত মার্চ মাস থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো একটানা বন্ধ থাকায় জেলার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে। স্যাঁতসেঁতে হয়ে আছে শ্রেণিকক্ষের মেঝে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চেয়ার-টেবিল ও আসবাবপত্রে পড়ে আছে ধুলাবালু ও ময়লার স্তর। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের আনাচে-কানাচে মাকড়সা ও পোকামাকড় বাসা বেঁধে আছে। এছাড়া করোনা কেড়ে নিয়েছে চিরচেনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কোলাহল মুখরতা। শিক্ষার্থীদের প্রিয়প্রাঙ্গণ এখন যেন ময়লা-আবর্জনা, ঝোপঝাড় আর লতাগুল্মের দখলে চলে গেছে। কুমিল্লা নগরী ও জেলার কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এমনই দৃশ্য দেখা গেছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রাণঘাতি করোনার প্রভাবে বন্ধ থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন কোলাহলহীন নির্জন স্থাপনার মতো পড়ে আছে। কুমিল্লা জিলা স্কুলের আঙ্গিনা ও খেলার মাঠ ঘাস-লতাগুল্মে ভরা। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের নিচতলার মেঝের স্যাঁতসেঁতে অবস্থা। স্থানীয় ময়নাল হোসেনসহ কয়েকজন জানান, করোনা শুরু হওয়ার পর স্কুলের দরজা-জানালা কখনো কাউকে খুলতে দেখেননি তারা। অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকা ভবনে মাকড়সা বাসা বেঁধেছে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলের মাঠে জন্মেছে বড় বড় ঘাস। আঙিনায় লতাগুল্ম, ঝোপঝাড়। শ্রেণিকক্ষ স্যাঁতসেঁতে। নগরীর তেলিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিচতলায় শ্রেণিকক্ষের টেবিল-চেয়ারে ধুলাবালুর স্তর পড়ে আছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার বলেন, এ স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নেই, তাই পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেকটা একই দশা হয়ে আছে জেলার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের। কুমিল্লা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা আক্তার বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সরকার স্কুল খোলার আগেই এ ব্যাপারে আমাদের নির্দেশনা দেবে, তখন আমরা আরো ভালো প্রস্তুতি নিতে পারব। কথা হয় জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল মজিদ ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল মান্নানের সঙ্গে। তারা বলেন, করোনার কারণে সরকারি নির্দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হলেও প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রধানকে তাদের প্রতিষ্ঠানের ভবন/স্থাপনা, আঙ্গিনা ও শ্রেণিকক্ষসহ আসবাবপত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে। সরকার যখনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশ দেবে তখন ছাত্রছাত্রীরা যেন স্বাস্থ্যকর পরিবেশ পায়—এ ব্যাপারে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ জেলায় ২ হাজার ১০৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২ হাজার ২৪৬টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৯ লাখ আর হাইস্কুল ও মাদ্রাসা মিলিয়ে শিক্ষার্থী আছে প্রায় ৭ লাখের অধিক। সূত্র মতে, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরিসহ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে অন্তত ২০ লাখ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027079582214355