বন্ধুর বাসায় স্কুলছাত্রীর মৃত্যু, আটক ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ছাত্রী আনুশকাহ আমিন অর্না বন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তার কলাবাগানের বাসায় গিয়েছিল। বন্ধু ফারদীন ইফতেখার দীহান কলাবাগানের ডলফিন গলির বাসায় নিয়ে যায় আনুশকাহকে। ওই বাসাতেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অচেতন হয়ে পড়ে আনুশকাহ। ওই অবস্থায় দীহান তাকে নিয়ে যায় ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই রক্তক্ষরণে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটে।

নিহতের স্বজনের অভিযোগ, আনুশকাহকে (১৬) বাসায় ডেকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে দীহান। হত্যার বিচার দাবি করে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। আনুশকাহ ধানমন্ডির মাস্টার মাইন্ড স্কুলের 'ও' লেভেলের ছাত্রী। তার বাবা আল আমিন মেশিনারিজ ব্যবসায়ী। বাসা ধানমন্ডির নতুন ১৩ নম্বরে। দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে আনুশকাহ বড়।

স্বজনের ধারণা, মৃত্যুর আগে মেয়েটি নির্যাতনের শিকার হয়েছে। নির্যাতনের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে তার। তার পেটের ডান পাশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। দীহানের বাসায়ও আনুশকাহকে হত্যার আলামত পেয়েছে পুলিশ। দীহানসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। দীহান একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের 'এ' লেভেলের ছাত্র।

ধর্ষণে অভিযুক্ত গ্রেফতার দীহান 

কলাবাগান থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ঠাকুর দাশ জানান, দীহানের সঙ্গে আনুশকাহর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে দীহানের সঙ্গে দেখা করার জন্য কলাবাগানে আসে মেয়েটি। দীহান তাকে ডলফিন গলির বাসায় নিয়ে যায়। সে সময় দীহানের বাসায় তার পরিবারের কেউ ছিল না। রক্তাক্ত অবস্থায় দুপুরে আনুশকাহকে দীহান ও তার বন্ধুরা আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বিকেল সোয়া ৩টায় হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ।

ঠাকুর দাশ আরও বলেন, ওই বাসা থেকে বেশ কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। যেখানে শারীরিক সম্পর্কের প্রমাণ মিলেছে। ওই কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানায়, গ্রুপ স্টাডির কথা বলে ওই কিশোরী দীহানের বাসায় গিয়েছিল।

আনুশকাহর মা শাহনুর জানান, তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে চাকরি করেন। সকাল ১১টায় আনুশকাহ তাকে ফোনে জানায়, বান্ধবীর বাসায় যাবে নোটশিট আনতে। দুপুর ১টার দিকে দীহান ফোনে জানায়, আনুশকাহ হাসপাতালে। রক্তক্ষরণ হয়েছে। এর পরই তিনি হাসপাতালে ছুটে এসে মেয়ের লাশ দেখতে পান। শাহনুর বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে দীহানের প্রেমের সম্পর্ক থাকতে পারে না। দীহান কৌশলে আমার মেয়েকে বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে। এ হত্যার বিচার চাই। মেয়েকে ছাড়া আমরা কীভাবে বাঁচব।

আনুশকাহর চাচাতো ভগ্নিপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, আনুশকাহ কোচিং করত। কোচিংয়ে যাওয়ার নাম করে সে বাসা থেকে বের হয়। কৌশলে আনুশকাহকে বাসায় নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে দীহান। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে গতকাল রাতে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, দীহানের বাসায় রক্তের আলামত ছিল। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। ধর্ষণের বিষয়টি মাথায় রেখে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চলছে। উত্তেজক কিছু খাওয়ানো হয়েছিল কিনা, বিষ প্রয়োগ করা হয় কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030088424682617