বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের। দীর্ঘদিন ধরে এমন সংকট চলে আসলেও সমাধানের উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। পানি সংকটের প্রতিবাদ জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের কেয়ারটেকারের অফিস তালাবদ্ধ করেছে আবাসিক শিক্ষার্থীরা। রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে অবশ্য হল কর্তৃপক্ষের সমস্যা সমাধানের আশ্বাসে তালা খুলে দেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রায় ছয় মাস ধরে শেরে বাংলা হলে সুপেয় পানির সমস্যায় ভুগছে আবাসিক শিক্ষার্থীরা। হলে যে পরিমাণ পানির চাহিদা রয়েছে তার অর্ধেকও পাচ্ছেন না তারা। যার ফলে খাবার পানি, অজু, গোসল এমনকি শৌচাগারসহ দৈনন্দিন কাজে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। তারমধ্যে গত তিনদিন ধরে খাবার ও গোসলের পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
শেরে বাংলা হলের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পানি নিয়ে হলে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু এটি সমাধানে হল কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। রোববার সকালে হলে পানির সমস্যার কথা জানাতে এসে দেখতে পাই কেয়ারটেকার অফিসে আসেননি। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকে কাউকে না পেয়ে অবশেষে অফিস কক্ষে তালাবদ্ধ করে দেই।
একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রিফাত সারোয়ার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গ্রীষ্মকাল থেকেই আমরা পানি সংকটে। প্রতিদিন দুপুর ১টায় গোসলের সময় পানি থাকে না। অনেকের ক্লাস পরীক্ষাসহ বিভিন্ন প্রোগ্রাম থাকে।
অপর শিক্ষার্থী ইহতিশামুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শনিবার দুপুরে গোসল করতে ওয়াসরুমে গিয়ে দেখি পানি নেই। তাই এই শীতের মধ্যেও সন্ধ্যার দিকে গোসল করতে হয়েছে। এ সমস্যা প্রতিদিনের। বারবার অভিযোগের পরেও হল কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে সমাধান দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই রোববার অফিস রুমে আবাসিক শিক্ষার্থীরা তালা দিয়েছে।
শেরে বাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ আবু জাফর মিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, রোববার যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে সেটার জন্য হলের শিক্ষার্থীরাই দায়ী। তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয়ে আবার তালা খুলে দিয়েছেন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে পানির সমস্যা সমাধান করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হলের ছাদে ট্যাংকে জমে থাকা হওয়া নির্গমণের পাইপ বাকা করে শিক্ষার্থীরা গোসল করে। এ কারণে কোন কোন সময় পাইপ ভেঙেও যায়। শনিবার ট্যাংকের পাইপ বাকা করে রাখায় সব পানি পড়ে যাচ্ছিলো। তাই আমাদের গার্ড পাম্পের লাইন বন্ধ করে দেন। যে কারণে শিক্ষার্থীদের একাংশ পানি পাচ্ছিলেন না। প্রতি সপ্তাহে অন্তত তিনবার এরকমের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, আর আমরা সমাধান করে দিচ্ছি।
তিনি বলেন, শেরে বাংলা হলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০০ থেকে ৬০০। শিক্ষার্থীদের পানির প্রচুর চাহিদা। বিশেষ করে শীত আসলে এই সমস্যা বেশি হয়। গত বছরেও এই সমস্যার সৃষ্টি হলে আমরা নতুন পাম্প বসিয়ে দেই। কিন্তু বর্তমানে শীতে মাঝে মধ্যে একই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে ভিসি স্যারের সাথে আলোচনা করে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।