ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে থানায় মারধর করার ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের ওপর আগেই হামলা চালিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন। এমন তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।
হারুন অর রশিদ বলেন, থানায় নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাদের নির্যাতনের যে ঘটনাটি ঘটেছে তার সূত্রপাত হয় বারডেম হাসপাতালে। সেখানে রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন আগেই বরখাস্ত এডিসি হারুনের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন। এ বিষয়টিও তদন্তে আসা উচিত।
এর আগে, গত রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেছিলেন, ডিএমপি কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানেন। এটি তদন্ত করা হবে; এডিসি দোষী হলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো পড়ুন : নিউমার্কেটে চোখ হারানো ঢাকা কলেজের মোশারফ হারুনের বিচার চান
সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এডিসি হারুনকে বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৩৯ (১) ধারা মোতাবেক আজ (সোমবার) থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন তিনি পুলিশ অধিদফতরে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
গত শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বারডেম হাসপাতালে প্রশাসনের এক কর্মকর্তার সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান এডিসি হারুন। সেই বাগ্বিতণ্ডা থামাতে ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তার ডাকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম ও বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক শরীফ আহম্মেদ মুনীম হাজির হলে তাদেরকে শাহবাগ থানার ভেতরে ধরে নিয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠে রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় হারুন অর রশিদকে একদিনে দুবার বদলি করা হয়। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) প্রথমে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক আদেশে তাকে রমনা বিভাগ থেকে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) উত্তর বিভাগে বদলি করা হয়। পরে পুলিশ সদর দফতর থেকে আরেক প্রজ্ঞাপনে এডিসি হারুনকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলি করা হয়। সবশেষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এর আগে, বিভিন্ন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটার অভিযোগ আছে হারুন অর রাশীদের বিরুদ্ধে। তিনি খবরের শিরোনাম হয়েছেন কখনও শিক্ষকদের পিটিয়ে, আবার কখনও নারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এমনকি নিজ সহকর্মীকেও চড় মেরে সমালোচিত হয়েছিলেন এডিসি হারুন।