এক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং অন্য একটি দুর্নীতির মামলায় চার্জ গঠিত হওয়ার পরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন জামালপুরের ঝাওলা গোপালপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোফাজ্জল হোসেন। জামিনে বের হয়ে তিনি মামলার বাদী উপাধ্যক্ষসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ করে দিয়ে নানাভাবে হয়রানিসহ চাকরিচ্যুতির হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, অধ্যক্ষ মোফাজ্জল কলেজের চার শিক্ষকের পদোন্নতির কথা বলে টাকা নিয়ে তা করেননি। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষক এবিএম ফরহাদ উদ্দিন ২০০৭ সালে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জামালপুর থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় জামালপুরের বিশেষ দায়রা জজ মোহাম্মদ জহিরুল কবির চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি অধ্যক্ষ মোফাজ্জলকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। ওইদিনই অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে আসেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে কলেজ তহবিলের ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কলেজ কর্তৃপক্ষের করা মামলায় আদালতে চার্জ গঠিত হয়েছে। এ মামলাতেই তিনি জেল খাটেন।
মামলার বাদী উপাধ্যক্ষ এবিএম ফরহাদ উদ্দিন বলেন, জামিনে এসেই অধ্যক্ষ মোফাজ্জল সাক্ষীসহ কিছু শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ করে চাকরিচ্যুতির হুমকি দিচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে টাকার বিনিময়ে অধ্যক্ষ মোফাজ্জল হোসেন অনার্স শাখায় ১৫ জন শিক্ষক নিয়োগ দিলেও গত তিন বছরে শাখা অনুমোদন হয়নি। এ ছাড়া তিনি ডিগ্রি শাখায় পাঁচ শিক্ষক-কর্মচারীকে বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেন। অধ্যক্ষ একক পরিচালনায় ব্যাংক হিসাব খুলে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেন। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসী মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, দুর্নীতি বা নৈতিক স্খলন মামলায় সাজা বা আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারবে। অজ্ঞাত কারণেই এখনও ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
অধ্যক্ষ মোফাজ্জল হোসেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সাজাপ্রাপ্ত মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে আছেন।