বাংলাদেশ থেকে অন্যদের মানবাধিকারের শিক্ষা নেয়া দরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

বাংলাদেশে বিনা বিচারে কাউকে মেরে ফেলা হয় না। মানবাধিকারের বিষয়ে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ একটি আদর্শ দেশ। অন্যদের বাংলাদেশের কাছ থেকে মানবাধিকারের শিক্ষা নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

যদিও দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বাংলাদেশে বিচার-বহির্ভূত হত্যা নিয়ে উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়ে আসছে। আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও এর সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি ও নির্যাতন এবং জেলে আটকে রাখা নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, বিরোধী দলকে হয়রানি-নির্যাতন করা হচ্ছে না। যারা সন্ত্রাসী, মানুষের বাড়ি ঘর জ্বালায়, সরকারি ও বেসরকারি সম্পদ বিশেষ করে বাস, ট্রেন, ট্রাক জ্বালাতে গিয়ে ধরা পড়ছে, বিশেষ করে মানুষকে পোড়াচ্ছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। রাজনৈতিক কারণে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। 

যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তারা সন্ত্রাসী উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত রয়েছেন, তারা সেটি পরিহার করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাই।
  
পশ্চিমারা যাদের বিরোধী দল বলছে, সরকার তাদের সন্ত্রাসী বলছে– এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটি সত্যি নয়। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে, তাদের সন্ত্রাসী বলেছি। কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আটক করার কোনো ইচ্ছা নেই।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো নির্বাচন ও নির্যাতনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা নিয়ে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, মানবাধিকারের দিক থেকে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ একটি আদর্শ দেশ। উন্নত দেশে শপিংমলে, ক্লাবে, স্কুলে যখন তখন মানুষ মারা হয়। বাংলাদেশে কোথাও মসজিদে, শপিংমলে বা ক্লাবে আক্রমণ করে মেরে ফেলে না। বাংলাদেশে বিনা বিচারে কাউকে মেরে ফেলে না। বাংলাদেশ থেকে অন্যদের মানবাধিকারের শিক্ষা নেওয়া দরকার।

গত ৫ বছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যর্থতা রয়েছে কি-না, জানা নেই। রোহিঙ্গা আমাদের ব্যর্থতা নয়। যেকোনো সময় আশা করি, রোহিঙ্গা ফেরত যাবে। শুধু বাংলাদেশ বা মিয়ানমার চাইলেই রোহিঙ্গা ফেরত যাবে না, অন্যান্য বহু প্রতিষ্ঠান অনেকই চায় না রোহিঙ্গারা ফেরত যাক। রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে চায়। একবার যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলো। তখন বিদেশিরা বলল, রোহিঙ্গাদের রাখাইনে পাঠায়েন না, তাদের (রোহিঙ্গাদের) আমরা (বিদেশিরা) নিয়ে যাব। এরপর অল্প কয়েকজন রোহিঙ্গা নিয়েছে। এ জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ধীরগতি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতিতে মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন করলে ড. মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। সম্প্রতি ঘানায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পাশে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ যৌথভাবে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ওপর বেশ খুশি। আর সম্পর্কে যে অস্থির কথা বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনায় তোলা হয়নি। আমরা চাই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্রও এটাই চায়। 

তিনি আরও বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠুর সঙ্গে ওয়াশিংটন যুক্ত করেছে সহিংসতা মুক্ত। তবে আমরা সহিংসতা মুক্ত নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে পারি না। কারণ এর নির্ভর করে আমাদের সংস্কৃতি, সব দল ও নেতৃত্বের আন্তরিকতা ও ইচ্ছা। যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু বলে উপদেশ দেয়। উপদেশ ভালো হলে আমরা গ্রহণ করি। বাস্তবসম্মত না হলে আমরা উপদেশ গ্রহণ করি না, আর এর জন্য যুক্তরাষ্ট্র রাগ করে না।

নির্বাচনের আগে বোয়িং উড়োজাহাজ নিয়ে পিটার হাসের দৌড়ঝাঁপ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রস্তাবটি অনেক দিন আগের। বাংলাদেশ বোয়িং কিনতে চাচ্ছে, কারণ আমাদের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ তার বিমানের বহরে কিছু বৈচিত্র্য আনতে চায়, তাই ১০টি এয়ারবাস কিনব। ১০টি এয়ারবাস কেনার খবর বের হলে বোয়িং প্রস্তাব দিয়েছে আরও সস্তায় উড়োজাহাজ বিক্রির।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কেনা–বেচার সঙ্গে নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যান্য কোনো বিষয় জড়িত কি-না, জানাতে চাইলে মোমেন বলেন, কেনা–বেচা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে অনুরোধ করে। আর অনুরোধকে চাপ মনে করি না।

ঢাকা–ওয়াশিংটনের মধ্যে টানাপোড়েন রয়েছে কি-না, উত্তরে তিনি বলেন, কোনো টানাপোড়েন নেই। এগুলো গণমাধ্যমে রয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027608871459961