সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরে আসবেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি২০ নেতাদের সম্মেলনের পর তিনি ঢাকা সফর করবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানিয়েছে, আগামী মাসে ফরাসি প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো ঢাকা সফরে এলে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিয়ন্ত্রিত অভিবাসনের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা ছাড়াও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করবে।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং তিনি এলে বাংলাদেশ তাকে স্বাগত জানাবে। তবে তিনি ঢাকায় আসার তারিখ উল্লেখ করতে চাননি।
এ বিষেয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখনও তারিখ চূড়ান্ত করতে পারিনি। আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি।’
একটি কূটনৈতিক সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রোর ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন।
তবে এই সফরের বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নেই। বলা হচ্ছে, সফরটিকে সকল গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্টে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক গভীর করার আরও প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মোমেন বলেন, ‘নারী ক্ষমতায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন- এগুলো স্বাভাবিক বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তন একটি বড় সমস্যা। ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি এখানে নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েছেন। আলোচনায় বাংলাদেশ তার প্রাসঙ্গিক তহবিলের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি বড় আকারে উত্থাপন করবে।
এর আগে ফরাসি প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের নভেম্বরে ফ্রান্স সফর করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ছাড়াও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
দুই নেতার নয়াদিল্লিতে ৯-১০ সেপ্টেম্বর জি২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
ফ্রান্স এবং বাংলাদেশ নিজেদের বন্ধুত্ব বৃদ্ধিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং কৌশলগত দিকনির্দেশনার জন্য নিয়মিত রাজনৈতিক পরামর্শের মাধ্যমে তাদের অংশীদারিত্বের সমস্ত দিক বিকাশ ও গভীর করার জন্য তাদের যৌথ ইচ্ছার কথা তুলে ধরেছে।
উভয় দেশ রাজনীতি ও কূটনীতি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন এবং শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য তাদের দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছে।
উভয় দেশ প্রাসঙ্গিক আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক ফোরামে টেকসই এবং সারগর্ভ সহযোগিতার গুরুত্ব স্বীকার করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ও ফ্রান্স তাদের অংশীদারিত্বের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা উপাদানকে আরও উন্নত করতে তাদের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে।
সেই লক্ষ্যে, উভয় দেশ সংলাপ জোরদার করতে এবং তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে, বিশেষ করে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে, যা এই সফরের সময় চালু হয়েছিল।
অধিকন্তু, তারা প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের ক্ষেত্রে ব্যক্ত প্রয়োজনীয়তা এবং প্রতিটি পক্ষের সাড়া দেওয়ার ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মধ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সম্ভাব্য প্রযুক্তি স্থানান্তর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই বিষয়ে উভয় পক্ষই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি ইচ্ছাপত্র স্বাক্ষরকে স্বাগত জানিয়েছে।