বাংলাদেশে গত ১২ মাসে সরকারি সেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে ২৪ শতাংশ মানুষকে ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে এই হার ৩৯ শতাংশ, এশিয়ার মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ঘুষ লেনদেন তালিকায় এশিয়ায় সবচেয়ে নিচে রয়েছে জাপান ও মালদ্বীপ। দুটি দেশেই মাত্র ২ শতাংশ মানুষ ঘুষ দিয়েছে।
গ্লোবাল করাপশন ব্যারোমিটার (জিসিবি) নামে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এশিয়ার ১৭টি দেশের ২০ হাজার মানুষের ওপর জরিপ চালিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংস্থাটি। গত মঙ্গলবার টিআইর ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
মূলত এশিয়ার দুর্নীতি ও ঘুষ নিয়ে এই প্রতিবেদন। এই ১৭টি দেশের প্রতি চারজনে তিনজন মনে করে, দুর্নীতি তাদের দেশে প্রধান সমস্যা। দেশগুলো হলো- ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, মালদ্বীপ, ভারত, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, জাপান, নেপাল, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, মঙ্গোলিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও শ্রীলংকা।
প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের ৭২ শতাংশ মানুষ মনে করে, সরকারের দুর্নীতিই দেশের প্রধান সমস্যা। সর্বোচ্চ ইন্দোনেশিয়ার ৯২ শতাংশ মানুষ মনে করে, দুর্নীতি তাদের দেশে প্রধান সমস্যা।
এতে বলা হয়, এই দেশগুলোর মানুষের চারজনের মধ্যে তিনজন দুর্নীতি দমন সংস্থার সঙ্গে পরিচিত। এসব দেশের ৬৩ শতাংশ মানুষ মনে করে দুর্নীতি দমন সংস্থা ভালো কাজ করছে। ১৭টি দেশের মধ্যে মিয়ানমারের জনগণ দুর্নীতি দমন সংস্থায় বেশি আস্থা রাখে বলে জরিপে উঠে এসেছে। এর পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। বাংলাদেশের ৮৬ শতাংশ মানুষ মনে করে, দুর্নীতি দমন সংস্থা ভালো কাজ করছে।
এশিয়ার এই ১৭টি দেশে ভোট কেনাবেচাও সাধারণ বিষয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে এসব দেশে প্রতি ৭ জনে একজনকে ভোট কেনার জন্য অর্থের প্রস্তাব দেওয়া হয়। দেশগুলোর ৩৮ শতাংশ মানুষ মনে করে, তাদের দেশে দুর্নীতি বাড়ছে এবং ২৮ শতাংশ মানুষ মনে করে, দুর্নীতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৭টি দেশের ২০ হাজার মানুষের ওপর সমীক্ষা চালায় টিআই। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের কাছে গত ১২ মাসে দুর্নীতি নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাওয়া হয়। মূলত পুলিশ, আদালত, সরকারি হাসপাতাল, পরিচয়পত্র সংগ্রহ ও অন্যান্য সেবা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের।