ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরে উঠল বাংলাদেশ প্রসঙ্গও।
হোয়াইট হাউসে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের কৌশলগত যোগাযোগ বিষয়ক সমন্বয়ক জন কিরবি বললেন, বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে ওয়াশিংটন ইতোমধ্যে তাদের প্রত্যাশা ‘স্পষ্ট করেছে’।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এই সফরকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
গত কয়েক দশকে ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্রে পরিণত হয়েছে। চীনের প্রভাব মোকাবেলায় ভারতকে পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে ভারতকে পাশে পায়নি যুক্তরাষ্ট্র। উল্টো পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল ও অন্যান্য পণ্য কিনেছে দেশটি। তারপরেও মোদীকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
এই সফর নিয়ে মঙ্গলবার রাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশি এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন বাংলাদেশের নির্বাচন এবং ভারতের ভূমিকা নিয়ে।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের সমর্থনে ইতোমধ্যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র হিসাবে ভারত থাকবে বলে কি আপনি মনে করেন?”
সেই সাংবাদিক বাংলাদেশ ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে ভারতীয় প্রভাব আমরা দেখেছি।”
জবাবে জন কিরবি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে ভারত সরকারের যা বলার, সেটা তাদেরই বলতে দেওয়া উচিত।
“বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের প্রত্যাশার কথা আমরা ইতোমধ্যে স্পষ্ট করেছি। আপনি যেটা বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে বাধা দিতে পারে, এমন ব্যক্তিদের ভ্রমণ ঠেকাতে আমারা ভিসা নীতি গ্রহণ করেছি।
“আমরা কেবল আমাদের কথাটা বলতে পারি। আমরা কোন অবস্থানে আছি সেটা আপনি জানেন। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট, তবে ভারত সরকারকে আমরা তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলতে দেব।”
ভারতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোদীর এই সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্রেকে দেশটি বলেছে, বাংলাদেশ নিয়ে তারা এমন কোনো পদক্ষেপ প্রত্যাশা করে না যা এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করে।
বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, সফরে যাওয়া মোদীর সম্মানে বাইডেন দম্পতি হোয়াইট হাউসের সাউথ লনে যে নৈশভোজ ও সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন, তার দুটিতেই ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ইমরান এর আগে দিল্লিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তা অবশ্য এসব প্রসঙ্গ তোলেননি। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন বিশ্বের যেখানেই যান, যে নেতার সঙ্গেই কথা বলেন, তিনি মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগের কথা বলেন। এটি একটি স্বাভাবিক ও ধারাবাহিক বিষয়, কেননা মানবাধিকারের বিষয়টি বাইডেন প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক উপাদান।
“আপনি এটা আশা করতেই পারেন যে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠকেও (মানবাধিকারের) বিষয়টি তুলবেন, যেমনটা তিনি সব সময় বন্ধু আর অংশীদারদের সঙ্গে আলাপে করে থাকেন।”