যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য প্রতিষ্ঠানটির নির্ধারিত বাংলোতে বাস করেও প্রতি মাসে বাসা ভাড়া নিচ্ছেন ৬২ হাজার টাকা। গত পাঁচ বছরে এভাবে তিনি নিয়েছেন প্রায় ৪০ লাখ টাকা। এটা নিয়মবহির্ভূত হওয়ায় অডিট আপত্তি দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
জানা গেছে, প্রতি মাসে বাড়ি ভাড়া ও আনুষঙ্গিক বাবদ ৬১ হাজার ৯৯৪ টাকা উত্তোলন করলেও বিপরীতে বাংলোয় অবস্থান করা বাবদ প্রতিদিন মাত্র ১২৫ টাকা বা মাসে ৩ হাজার ৭৫০ টাকা হারে পরিশোধ করেন উপাচার্য।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারীসহ নির্ধারিত বাংলো রয়েছে। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ২০১৭ সালের ২০ মে প্রথম মেয়াদে চার বছর এবং ২০২১ সালের ১ জুন মেয়াদে পরবর্তী চার বছরের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন। অভিযোগ উঠেছে, যবিপ্রবিতে যোগদানের পর ফিন্যান্স কমিটি ও রিজেন্ট বোর্ডের ক্ষমতা ব্যবহার করে অভিনব অনিয়ম করে ফাইল নোটের মাধ্যমে বাড়ি ভাড়া, গ্যাস বিল, গ্যারেজ ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি তুলে নিচ্ছেন।
বিষয়টি নজরে আসায় ইউজিসির বাজেট পরীক্ষক দল তাদের প্রতিবেদনে ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত ও ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেট পরীক্ষাকালে এই অনিয়ম তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনের এক জায়গায় উল্লেখ করা হয়েছে, উপাচার্যের এয়ারমার্ক বাংলো থাকা সত্ত্বেও ঢাকায় বাসার জন্য ভাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে পরিশোধ এবং এ ক্ষেত্রে বার্ষিক আর্থিক সংশ্নেষ ৭ দশমিক ৩২ লাখ টাকা। পর্যবেক্ষক দলের সুপারিশে উপাচার্যকে ঢাকায় বাসার জন্য ভাড়া বাবদ প্রদত্ত আর্থিক সুবিধা বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, উপাচার্যের মতোই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনে বসবাসরত আরও অনেকের ক্ষেত্রে একই অনিয়ম করা হয়েছে। আবাসিক ভবনে বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সরকারি ভাড়া উত্তোলন করে নামমাত্র ভাড়া পরিশোধ করেন। এ ক্ষেত্রেও ওই অডিট রিপোর্টে বার্ষিক ৮৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার অডিট আপত্তি জানানো হয়েছে।
যবিপ্রবি পরিচালক (হিসাব) জাকির হোসেন অডিট আপত্তির বিষয়টি স্বীকার করলেও এ নিয়ে কোনো ধরনের বক্তব্য দিতে রাজি হননি। উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ইউজিসির অডিট আপত্তির ব্যাপারে লিখিতভাবে জবাব দেওয়া হয়েছে। এরপর তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটিই চূড়ান্ত হবে।