বাকৃবিতে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোচনা সভা, অংশ নেননি অধিকাংশ শিক্ষক

বাকৃবি প্রতিনিধি |

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বঙ্গবন্ধু ও কৃষিবিষয়ক বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মূল্যায়ন করা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে পাঁচশ শিক্ষকের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি অনুষ্ঠানে অংশ নেননি। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশের আয়োজনে 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশে কৃষি শিক্ষার অগ্রযাত্রা' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় ওই ঘটনা ঘটে। 

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। এ ছাড়াও ময়মনসিংহের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫-৫০ জন শিক্ষককে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যায়। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও ময়মনসিংহের মেয়র ইকরামুল হক টিটুর সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

অনুষ্ঠানের আয়োজক গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন বলেন, শিক্ষকদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি বা মূল্যায়ন করা হয়নি এমন তথ্য সত্য নয়। অনেক শিক্ষক স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে হয়তো অনুষ্ঠানে অংশ নেননি। আমরা আমাদের সাধ্যমতো সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। 

বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা, কর্মচারী থাকবেন। ময়মনসিংহ শহর থেকে হয়তো দু-একজন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও কৃষক লীগের নেতৃবৃন্দ থাকবেন এমনটাই কাম্য। কিন্তু ময়মনসিংহের অন্যত্র থেকে ট্রাকে ট্রাকে মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে, এটা কখনোই কাম্য ছিল না। তা ছাড়াও এ ধরনের প্রোগ্রামে ক্যাম্পাসের ভেতরে ১০-১২টি মাইক ব্যবহার করা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোভা পায় না।

গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের আরেক অংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সালেহ মাহফুজুল বারী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকের সংগঠন থেকে বেরিয়ে যাওয়া কিছু বামপন্থি শিক্ষক অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছেন। অনুষ্ঠানটি যদি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে করা যেত, তাহলে সেখানে স্বতঃস্ম্ফূর্তভাবে শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোচনা সভায় এত কম শিক্ষক অংশ নিয়েছে বলে নজির নেই। বন্ধ ক্যাম্পাসে এ ধরনের প্রোগ্রাম মানায় না। করোনা মহামারির এই পরিস্থিতিতে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন সত্যিই দৃষ্টিকটু।

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন বলেন, বাইরে থেকে এত মানুষ আসবে এটা আমি জানতাম না। আয়োজক কমিটি আমাকে আগে থেকে বিষয়গুলো সেভাবে অবহিত করেনি। আয়োজকরা করোনা মহামারির মধ্যে এত বিপুলসংখ্যক মানুষ নিয়ে অনুষ্ঠান করবেন, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। অনুষ্ঠান ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনসহ অপ্রীতিকর যেগুলো ঘটনা ঘটেছে, তার দায়ভার আয়োজকদের।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058472156524658