বাকৃবিতে যিনি রেজিস্ট্রার, তিনিই কোষাধ্যক্ষ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, বাকৃবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, বাকৃবি : উপাচার্য, রেজিস্ট্রার এবং কোষাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। এই গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদের ব্যক্তিদের দায়িত্ব ও কাজের পরিধিও অনেক বেশি। অনেক সময় নিজ নিজ দপ্তরে কাজ করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় তাদের। কিন্তু বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) রেজিস্ট্রার এবং কোষাধ্যক্ষ এই দুইটি গুরুত্বপূর্ণ পদে বর্তমানে একই ব্যক্তি দায়িত্ব পালন করছেন। 

বর্তমানে বাকৃবির রেজিস্ট্রার এবং ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করছেন মো. অলিউল্লাহ। একজন ব্যক্তি দুটি দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে পারছেন কিনা, বাকৃবিতে কি যোগ্য লোকের অভাব, কি কারণে কোষাধ্যক্ষ নিয়োগে এতো দেরি? এমন নানান আলোচনা-সমালোচনা চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রার মো. ছাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয় মো. অলিউল্লাহকে। পরে ১ মার্চ থেকে বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন তিনি।

পরবর্তীতে গত বছরের ২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২৫তম সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে ভারমুক্ত করে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেয়া হয়।

অন্যদিকে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১০ ডিসেম্বর থেকে ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ হিসেবেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন মো. অলিউল্লাহ। এর আগে কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন মো. রাকিব উদ্দিন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দুবার কার্যসীমা বাড়ানো হয়েছিলো রাকিব উদ্দিনের। কিন্তু কোষাধ্যক্ষ পদে বাকৃবি প্রশাসন যোগ্য কাউকে খুঁজে পায়নি এতদিনেও। তাই অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মো. অলিউল্লাহকে।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্থাপন শাখার অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (সংস্থাপন-৫) আরীফ জাহাঙ্গীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমনটা কখনো হয়নি, একই সাথে দুই দায়িত্ব দেয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই। যেখানে এক শাখাতেই একজন ব্যক্তি কুলিয়ে উঠতে পারেন না, সেখানে আরেকটা শাখার দায়িত্ব! সমস্যা হবে, বিশৃঙ্খলা বড় আকারে দেখা দিবে এটাই স্বাভাবিক।

তিনি বলেন, কোষাধ্যক্ষ অফিসের লোকজন ফাইল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে দৌড়াদৌড়ি করছে। রেজিস্ট্রার অফিসে এক পাশে সংস্থাপনের ফাইল, অন্যপাশে কোষাধ্যক্ষের ফাইল পড়ে থাকে। একজন ব্যক্তি কোনো দিনই এ ধরনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কুলিয়ে উঠতে পারার কথা নয়। এ ধরনের ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রথম।

বাকৃবির উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. আবু হাদী নূর আলী খান বলেন, একজন রেজিস্ট্রারের যে পরিমাণ কাজের পরিধি, তার থেকে বেশি কাজ একজন কোষাধ্যক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সেকশনে কত টাকা বাজেট আছে, কোন ক্রয়কার্যটা কিভাবে সম্পাদন করা হবে, কতটুকু বাজেট স্যাংশন করবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট সক্ষমতা কত এসব কাজ একজন কোষাধ্যক্ষ করে থাকেন।

অধ্যাপক আবু হাদী নূর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যত কর্মকর্তা-কর্মচারীর ফাইলগুলো আছে, সেগুলো রেজিস্টার মহোদয়কে দেখতে হয়। দুই পদের কাজ যেহেতু একজন করছে, এতে করে কার্যক্রমের বিষয়গুলো একটু ধীরগতিতে হচ্ছে। নিঃসন্দেহে তার উপর চাপ পড়ছে। বাকৃবির মত একটি জায়গায় যোগ্য ব্যক্তি কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ না হলে বিশ্ববিদ্যালয় সমস্যার মুখে পড়বে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ মো. অলিউল্লাহর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, একজন ব্যক্তি দুই দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ কিন্তু ঠিকই চলমান রয়েছে। কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা এজন্যে কাজগুলো আমি নিজেও বিভিন্ন কাজ তদারকি করছি। চেষ্টা করছি খুব দ্রুতই কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়ার।

বাকৃবি উপাচার্য বলেন, যেহেতু কোষাধ্যক্ষ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। সেক্ষেত্রে যোগ্য এবং দক্ষ ব্যক্তি নিয়োগে একটু সময় নিচ্ছি। রেজিস্ট্রারকেও এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী আমরা বিজ্ঞাপন দিয়ে দক্ষ ব্যক্তিকে নিয়োগ দেব।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ - dainik shiksha শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035579204559326