বাকেরগঞ্জে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ১৭০ জন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এতে শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদগুলো ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চালানো সম্ভব হলেও শ্রেণিকার্য পরিচালনার জন্য সহকারী শিক্ষক পদের দায়িত্ব অন্য কাউকে দিয়ে চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
বাকেরগঞ্জ প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ২৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যার মধ্যে প্রধান শিক্ষকের মঞ্জুরিকৃত ২৮০টি পদের মধ্য শূন্য রয়েছে ৫২টি পদ এবং সহকারী শিক্ষকের মঞ্জুরিকৃত ১ হাজার ৩২৬টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১১৮টি। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের পদ বেশি শূন্য আছে দুর্গম অঞ্চল খ্যাত ফরিদপুর, দুর্গাপাশা ও নলুয়া ইউনিয়নে।
বাকেরগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শান্ত তালুকদারের বাবা স্বপন তলুকদার বলেন, শিক্ষক সংকটের কারণে অনেক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে চলমান সংকট মোচন না করলে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের সঠিক পাঠদান দেওয়া সম্ভব হবে না।
ফরিদপুর ইউনিয়নের ৩৭ নম্বর ইছাপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাহিনুর বেগম জানান, আমার স্কুলে ১৯০ জনের অধিক ছাত্রছাত্রীর জন্য মাত্র দুই জন শিক্ষক কর্মরত আছি। স্কুল খুললে সবদিক কীভাবে সামাল দেব, বুঝতে পারছি না। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বাকেরগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোশাররফ হোসেন বলেন, এ সমস্যা নিরসনে শিক্ষক নিয়োগের কোনো বিকল্প নেই।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খোন্দকার জসিম আহমেদ বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের শূন্য পদের তালিকা জেলা অফিসে পাঠিয়েছি। সরকারি নিয়মানুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ পাওয়ার পর কাঙ্ক্ষিত চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষক পাঠালে চলমান সমস্যা সমাধান হবে।
বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মজুমদার বলেন, সরকারিভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান আছে। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই চাহিদা অনুযায়ী মঞ্জুরিকৃত শূন্য পদে শিক্ষক পাঠানোর মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান হবে। আর কাজগুলো দ্রুত সম্পাদনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যথেষ্ট তত্পর রয়েছেন।