পড়া দিতে না পারায় ময়মনসিংহের ত্রিশালে মাদরাসাতুল আমান লি-তাহসীনিল কুরআন মাদরাসার অনাবাসিক এক শিশু শিক্ষার্থীকে বাথরুমে আটকে রেখে লাঠিপেটা করে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মাদরাসা শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
নির্যাতনের শিকার ৬ বছরের ওই শিক্ষার্থী হল, তাকিয়া মাবরুকা তুবা। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে তার পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় শিশু মাবরুকার বাবা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তুবার বাবা হিমেল তরফদার জানান, আমার মেয়ে ওই মাদরাসার নুরানী বিভাগে পড়ছে। আমি প্রতিদিন সকালে তাকে দিয়ে আসি, রাতে আবার নিয়ে আসতাম। আমি গত সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে মাদরাসা থেকে মেয়েকে নিয়ে আসতে গেলে তাকে অচেতন অবস্থায় শরীরে জ্বরসহ বাড়িতে নিয়ে আসি। মেয়েকে বাড়িতে এনে বলি মা তোমার কি হয়েছে। এ সময় সে জানায়, রশি দিয়ে হাত বেধে বাথরুমে আটকে রেখে লাঠি দিয়ে অমানবিকভাবে পিটিয়েছেন হুজুর শহিদুল ইসলাম। সে ভয়ে কিছুই বলছে না।
এ অভিযোগ নিয়ে মাদরাসার পরিচালক আমানুল্লাহ হুজুরের কাছে গেলে তিনি আমাকে অপমান করেন। ক্ষমতার প্রভাব ঘাটিয়ে এক পর্যায়ে তিনি সকল শিক্ষার্থীদের ডেকে এনে আমাদের আটকে রাখেন। আমি ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে। মেয়ের শরীরের মারধরের চিহ্ন রয়েছে। প্রচণ্ড অত্যাচার ও মারধরের ফলে তার শরীরে জ্বর এসেছে। তাকে বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
শিশু তাকিয়া মাবরুকা তুবা বলেন, আমি একটা পড়া পাইনি তাই শহিদুল হুজুর আমাকে মারে। পরে রশি দিয়ে আমাকে বেধে বাথরুমে আটকে রেখে লাইট বন্ধ করে রাখে। আমি অনেক ভয় পাই। কান্নাকাটি করে বমি করে দেই। পরে হুজুর আমাকে বাথরুম থেকে ক্লাসে নিয়ে যায়। হুজুর আব্বু-আম্মুকে এসব কথা বলতে না করে। বললে হুজুর আবার অনেক মারবে।
অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। আমি বাচ্চাটিকে পড়াশোনার জন্য শাসন করেছি। বেত দিয়ে কয়েকটি আঘাত করেছি। এছাড়া শিশুটিকে আমি আর কোনো নির্যাতন করি নি।
এ বিষয়ে মাদরাসার পরিচালক আমানুল্লাহ বলেন, শিশুটির পিতা যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। আমাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ আছে। এখানে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর অভিযুক্ত শিক্ষক শহিদুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ত্রিশাল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাইন উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।