আগামীতে বাদুড় থেকে আরও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। বাদুড়ের আবাসস্থল ধ্বংস করে মানুষ এই ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বিশ্বের ১১৩টি দেশে ৯০ লাখ বর্গকিলোমিটার জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে বাদুড়বাহিত রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে লাওস, ভারত, ব্রাজিল ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো।
অন্ধকার গুহা ও ঘন বনে বাদুড়ের বসবাস। গাছের পরাগায়ণ এবং পোকামাকড় খেয়ে গ্লোবাল ইকোসিস্টেমে অবদান রাখে এই প্রাণী। তবে, ক্ষতিকারক ভাইরাসও বহন করে বাদুড়।
শিল্পায়ন ও নগরায়ণের মাধ্যমে বাদুড়ের আবাসস্থল দখল করছে মানুষ। ফলে বাদুড় আর মানুষের দূরত্ব কমে আসছে। যা বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাদুড় মানুষের সংস্পর্শে আসায় গত দুই দশকে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্বের ১১৩টি দেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করেছে রয়টার্স, যেখান থেকে আবারও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ লাওসে বাদুড়-সংক্রান্ত পরীক্ষা বাড়িয়েছে বিজ্ঞানীরা। দেশটিতে করোনার মতো ভাইরাস খুঁজে পেয়েছে তারা। দ্রুতগতির রেললাইনের মাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যোগাযোগ বাড়িয়েছে চীন। এমন যোগাযোগব্যবস্থার মাধ্যমেই চীন থেকে ভাইরাসটি লাওসে গিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই কায়দায় তা বিশ্বজুড়েও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা বিজ্ঞানীদের।
ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম ভারতের কেরালা। যেখানে ২০১৮ থেকে ৩ বার মারাত্মক নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বাদুড় ফলপ্রেমী হওয়ায় বাড়ির পাশের আমগাছ থেকে ভাইরাসটি ছড়াচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভবিষ্যতে বাদুড়ের মাধ্যমে মহামারি ছড়ানোর উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে ব্রাজিল। দ্রুত রেইনফরেস্ট ধ্বংসের কারণে দেশটির ১৫ লাখ বর্গকিলোমিটার জমিতে বাদুড়বাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।
পশ্চিম আফ্রিকায় নিয়মিত হয়ে উঠেছে ইবোলা ও মারবার্গের প্রাদুর্ভাব। কারণ স্বর্ণ, লোহাসহ অন্যান্য খনিজের সন্ধানে নির্বিচারে গাছ কাটছে ওই অঞ্চলের খনি শ্রমিকরা।
বাদুড়ের আবাসস্থল রক্ষার পাশাপাশি প্রাদুর্ভাব পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে আরও বিনিয়োগের পরামর্শ বিজ্ঞানীদের।